পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৭৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যুধিষ্ঠির জিজ্ঞাসেন কুম্ভীরে তখন । -পুনশ্চ কহিল কর্ণ জন্ম বিবরণ ॥ দুৰ্ব্বাসার মন্ত্র পায় যেমত প্রকারে । কহিল সকল কথা রাজা যুধিষ্ঠিরে ॥ এতেক শুনিয়া ধৰ্ম্ম মায়ের বচন । মলিন বদনে পুনঃ করেন রোদন ॥ এতদিনে হেন কথা কহিলে জননী । কর্ণ মম সহোদর এতদিনে শুনি ॥ ভ্রাতৃবধ করি আমি পাপিষ্ঠ চণ্ডাল । কর্ণ মম সহোদর বিক্রমে বিশাল ॥ হাহাকার করিয়া কান্দয়ে পঞ্চজন । পুনশ্চ প্রবোধ দেন দৈবকীনন্দন ॥ তবে যুধিষ্ঠির রাজা শোকেতে জর্জর । ঘোড়হাতে কহিলেন জননী গোচর । শুনগো জননী আমি করি নিবেদন । জানিলে না হ’ত কতু কর্ণের নিধন ॥ গুপ্ত করি রাখিলে না কহিলে আমারে। বৃথা বধ করিলাম জ্যেষ্ঠ সহোদরে ॥ এ সকল কথা যদি কহিতে জননী । তবে কেন বিনাশিব কর্ণ মহাজ্ঞানী ॥ তবে কেন বিনাশিব রাজা দুৰ্য্যোধন। ঃশাসন দুৰ্ম্ম খাদি ভাই শত জন ॥ তবে কেন ভীষ্ম বীর ঈদৃশ হইবে। অভিমনু্য পুত্র কেন রণেতে পড়িবে ॥ " তবে কেন হইবেক দ্রোণের নিধন । পূৰ্ব্বেতে এ সব যদি কহিতে বচন ॥ দৈবে কর্ণ রাজা ছিল হস্তীননগরে। দুৰ্য্যোধন তার বাক্য অন্যথা না করে ॥ কর্ণ-আজ্ঞাকারী ছিল যত কুরুগণ । যুদ্ধ না হইত মাতা জানিলে এমন ॥ জ্যেষ্ঠ ভাই পিতৃ তুল্য সর্বশাস্ত্রে বলে | এ কলঙ্ক রাখিলাম আপনার কুলে ॥ এ বড় দারুণ শোক রছিল অন্তরে । এতদিনে হেন কথা কহিলে আমারে ॥ মা হইয়া পুত্র প্রতি এমত তোমার । শুন গো জননী তাপ বড়ল অপার। ł | শাপ দিব আমি বড় দুঃখ পাই মনে । গুপ্তকথা না থাকিবে নারীর বদনে ॥ নারীর উদরে কভু কথা না রহিবে । অতি গুপ্ত কথা হৈলে প্রকাশ হুইবে ॥ এত বলি যুধিষ্ঠির অতি শোকাকুল । পুনঃ প্ৰবোধেন কৃষ্ণ হয়ে অনুকূল ৷ কৃষ্ণবাক্যে প্রীত পেয়ে পাণ্ডুর নন্দন । শাস্ত্রমত করিলেন কর্ণের তপণ ॥ ঘটোৎকচ রাক্ষসের করেন তপণ । , পুনঃ স্নান করি কুলে উঠেন তখন ॥ কুলে রছিলেন ধৰ্ম্ম হইয়া অস্থখী । ভীমাৰ্জ্জুন সহদেব কেহ নহে স্বর্থী ॥ গান্ধারী পুত্রের শোকে বিস্তর কান্দিল । পতিহীন নারীগণ যত সঙ্গে ছিল ৷ শাস্ত করি যুধিষ্ঠির আনেন শিবিরে। ধৃতরাষ্ট্র প্রভৃতি রহিল অনাহারে ॥ শিবিরে রহিল সবে বিষাদিত মনে । গান্ধারী পুত্রের শোকে কান্দে রাত্রিদিনে ॥ অনাহারে তিন রাত্রি করিল বঞ্চন । নিশিযোগে ফলাহার কৈল সৰ্ব্বজন ॥ আজি তিন দিন হৈল পুত্র নাহি দেখি । কোথা দুর্য্যোধন কোথা ছন্মুখ ধামুকী ॥ গান্ধারী কৃষ্ণেরে কন করিয়া রোদন। আজি শূন্য হৈল মম সকল ভুবন ॥ কোথা গেল দুর্য্যোধন কহ যদুমণি। অকারণে প্রাণ ধরি আমি অভাগিনী ॥ সকল সংসার শূন্য পুত্রের বিহনে। শুন কৃষ্ণ কত দুঃখ উঠে মম মনে ॥ শতপুত্র আমার যেমন শশধর । কি হইল কোথা গেল কহ যদুবর ॥ সে হেন স্বন্দর মুখ অনলে পুড়িল । নানা আভরণ অঙ্গে কেবা কাড়ি নিল । অগুরু চন্দনে লিপ্ত ছিল নিরস্তরে । কেমনে অনল দিলা এমন শরীরে ॥ স্বপ্লবৎ দেখি এই সকল সংসার । কহ কোথা গেল মম শতেক কুমার ॥