এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
হৃদি শূলেন নির্ভিন্নং নির্য্যদন্ত্র-বিভূষিতং।
অষ্টক বলিল তুমি আছিলা কোথায়। কি কারণে চ্যুত হ'লে কহিবা আমায়।। রাজা বলে মর্ত্তেতে ছিলাম মহারাজা। পৃথিবীর লক্ষ রাজা সবে করে পূজা।। পুত্রে রাজ্য দিয়া পুনঃ গেলাম কাননে। তপ আচারিলাম যে পরম যতনে।। শরীর ত্যাজিয়া স্বর্গে করিয়া গমন। স্বর্গভোগ করিলাম না যায় খণ্ডন।। তথা হৈতে গেলাম যে ইন্দ্রের নগরী। সহস্র বৎসর তথা স্বর্গভোগ করি।। ইন্দ্রের অমরাবতী নাহি পাঠান্তর। নানা ভোগ করিলাম সহস্র বৎসর।। তথা হৈতে ব্রম্ভলোকে করিলাম গতি। দশলক্ষ বৎসর তথা হৈল স্থিতি।। নন্দনাদি বন তথা কি কব সে কথা। অপ্সরীর সহ ক্রীড়া করিলাম তথা।। কামরূপী হৈয়া বেড়ালাম যথা তথা। দৈবে ইন্দ্র একদিন জিজ্ঞাসিল কথা।। ইন্দ্রেরে কহিনু আপনার পুন্যচয়। তথা হৈতে সে কারণে পড়ি মহাশয়।। অষ্টক বলিল কহ শুনি মহামতি। তথা হৈতে পড়িলে হৈবে কোন্ গতি।। রাজা বলে ক্ষীণপুণ্য হয় যেই জন। ভৌম নরকের মধ্যে পড়ে ততক্ষণ।। রজোবীর্য্যযুত হ'য়ে পুনঃ দেহ ধরে। দ্বিপদ চৌপদ হয় যোনি অনুসারে।। অষ্টক বলিল তবে হবে কি প্রকার। এ ঘোর নরক হৈতে পাইবে নিস্তার।। রাজা বলে তপ-শান্তি-দয়া-দান-ফলে। এই সব স্বর্গভোগ হয় অবহেলে।। যজ্ঞ হোম ব্রত করে অতিথিসেবন। গুরু দ্বিজ সেবা করে দেব-আরাধন।। তবেত তরিতে পার নরক হইতে। কহিলাম বৃত্তান্ত এ সকল তোমাতে।। অষ্টক বলিল তুমি বড় পুণ্যবান্। হেথায় নাহিক কেহ তোমার সমান।। চিরদিন হেথায় থাকহ মহাশয়। নিশ্চিন্ত হইয়া থাক ইন্দ্রে নাহি ভয়।। রাজা বলে ক্ষীণপুণ্য রহিতে না পারি। স্বর্গেতে রহিতে আর নহি অধিকারী।। শুনিয়া অষ্টক শিবি বসু প্রতর্দ্দন। রাজারে ডাকিয়া তথা বলে সর্ব্বজন।। আমা সবাকার পুণ্য যতেক আছয়। সেই পুণ্যে হেথা তুমি রহ মহাশয়।। রাজা বলে পরদ্রব্য না করি গ্রহণ। কৃপণের বৃত্তি এই শুণ মহাজন।। শিবি বলে রাজা তুমি তৃণ গাছি দিয়া। আমা সবাকার পুণ্য লহত কিনিয়া।। রাজা বলে যত কহ বালকের ভাষ। তৃণ দিয়া লব পুণ্য লোকে উপহাস।। এত শুনি অষ্টকাদি বলে চারিজন। নিশ্চয় হেথায় যদি না রহ রাজন।। তোমার সহিত তবে যাব চারিজন। যথায় নৃপতি তুমি করিবা গমন।। এতেক বচন যদি তাহারা বলিল। দিব্যমুর্ত্তি পঞ্চরথ সে স্থানে আইল।। পঞ্চরথে চড়িয়া চলিল পঞ্চজন। ইন্দ্রের অমরাবতী করিল গমন।। শ্রীবৈশম্পায়ন বলে শুন জন্মেজয়। সেই চারিজন তাঁর কন্যার তনয়।। কন্যার পুত্রের পুণ্যে তরিল যযাতি। পুনরাপি স্বর্গে রাজা করিল বসতি।। যযাতি-চরিত্রকথা অমৃত সমান। শ্রবণে মধুর নাহি ইহার সমান।। হৃদয়ে নির্ম্মল জ্ঞান হয়ত উদিত। পাঁচালী প্রবন্ধে কাশীদাস-বিরচিত।।
--------
পুরু বংশ কথন
জন্মেজয় বলে স্বর্গে গেল নৃপবর। পূরুকে করিল রাজা রাজ্যের ঈশ্বর।। আর চারি পুত্রে শাপ দিল নরপতি। কি কর্ম্ম করিল তারা কহ মহামতি।।