পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৮৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե-( o তোমা হৈতে কুরুকুল পবিত্র হইল। তোমার সমান রাজা না হবে নহিল ॥ যত রাজকৰ্ম্ম নীতি শাস্ত্রেতে বাখানে । সকল তোমাতে পূর্ণ, তুমি পূর্ণ গুণে ॥ যেই কৃষ্ণ অনাদি পুরুষ সনাতন । র্যার তত্ত্ব না পান স্বয়স্তু পঞ্চানন ॥ আগমে কিঞ্চিৎ তত্ত্ব না পায় যাহার । হেন প্রভু বশ হৈল গুণেতে তোমার ॥ ব্রাহ্মণ-সেবার গুণ কে বলিতে পারে । সকল ধৰ্ম্মের শ্রেষ্ঠ সংসার ভিতরে ॥ ব্রাহ্মণেতে প্রীতি হন দেব নারায়ণ । এই হেতু দ্বিজসেব কর অনুক্ষণ ॥ পত্রিমিত্র প্রজ বন্ধু মুহ্যদ সুজন । সদয় হৃদয়ে কর সবার পালন ॥ এইমত বিধিমত কহিয়া রাজারে । কহিলেন শেষ ধৃতরাষ্ট্রের উত্তরে ॥ ধৃতরাষ্ট্র পাঠাইল তোমার সদনে । এই ভিক্ষা দেও মোরে প্রসন্ন বদনে ॥ রাজার নিয়ম এই আছে পূর্ববাপর । ক্ষত্রপম্ম বিধি নীতি বেদের উত্তর ॥ রাজা হ’য়ে করিবেক প্রজার পালন । দান ব্রত যজ্ঞ নানা ধৰ্ম্ম উপার্জন ॥ শেঘকালে তনয়েরে রাজ্য ভার দিয়া । বনবাস করিবেন যোগ আচরিয়া ॥ a ফলমূলাহারা হয়ে করিবে বসতি । সমাধি সাধিয়া লভিবেক দিব্যগতি ॥ সে কারণে ধৃতরাষ্ট্র পাঠাইল মোরে । সাত্বন পূর্বক তোমা কহিবার তরে ॥ " অবশেষ কাল এই হইল অামার । কুলধৰ্ম্ম মত আমি করিব আচার ॥ যথাশক্তি কিছুমাত্র যোগ আচরিব । তব অনুমতি হ’লে কাননে পশিব ॥ বিদুর বচন শুনি যেন বজ্রাঘাত । পড়িল অস্থির হয়ে পাণ্ডবের নাথ ॥ কি বলিল খুল্লতাত নিষ্ঠুর বচন । কোন দোষে জ্যেষ্ঠতাত করেন বর্জন ॥ অক্ষসূত্রধরা দেবী পদ্মাসনাগত তথা । [ মহাভারত। জ্যেষ্ঠতাত মোরে যদি ত্যজিবে নিশ্চয়T_ তবে আর কিসের আমার গৃহাশ্রয় ॥ আমিও সন্ন্যাসী হৈয়া যাব বনবাসে । কি করিব ধন জন বন্ধু গ্রাম দেশে ॥ এত বলি যুধিষ্ঠির আকুল হৃদয় । বিদুর সহিত যান অন্ধের আলয় ॥ কান্দেন অন্ধের পদ ধরি ধৰ্ম্মরায় । কোন দোষে তাত তুমি ত্যজিবা আমায় ॥ রাজ্য দেশ ধন জন সকলি তোমার । তোমা বিনা পাণ্ডবের কেবা আছে আর ॥ কোন দোষে দোষী আমি নাহি তব পদে । বালকেরে ত্যাগ কর কোন অপরাধে ॥ আমি রাজা হৈতে যদি দুঃখ তব মনে । আমি অভিষেক করি তোমার নন্দনে ॥ যুযুৎস্থরে অভিষেক করিব এখনি । হস্তিনার পাটে তারে দিব রাজধানী ॥ তোমার কিঙ্কর আমি তুমি মম প্রভু । তব আজ্ঞা বিচলিত নহি আমি কভু ॥ এইরূপে যুধিষ্ঠির সহ ভ্রাতৃগণ । লোটাইয়া ধরিলেন অন্ধের চরণ ॥ ধৃতরাষ্ট্র, গান্ধারী, কুস্তা, বিদুর ও সঞ্জয়ের বনযাত্রা : ধৃতরাষ্ট্র রাজা যান গহন কানন । শুনিয়া ব্যাকুল চিত্ত ধৰ্ম্মের নন্দন ॥ ভ্রাতৃগণ কৃষ্ণাসহ আসি দৌড়াদৌড়ি । অন্ধরাজ গান্ধারী কুন্তীর পায়ে পড়ি । ধূলায় ধূসর হৈয় করয়ে ক্ৰন্দন । আনাথ হইল আজি পাণ্ডুপুত্ৰগণ ॥ পিতৃশোক-নাহি জানি তোমার কারণে । সর্ববশোক পাসরিনু তোম। দরশনে ॥ তোমার বিহনে সব হৈল অন্ধকার । কোন হুখে গৃহেতে রহিব মোরা আর ॥ কি দেখি ধরিব প্রাণ উপায় কি হবে । তোমার সহিত তাত বনে যাব সবে ॥ এইরূপে যুধিষ্ঠির কান্দিয়া অপার । প্রবোধ করেন সবে অশেষ প্রকার ॥