এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
আতিঃ শক্তিভি-রক্ষাভিঃ সতত্ং পরিবেষ্টিতাং।
কন্যা ল'য়ে যায় ভীষ্ম শাল্বরাজা দেখে। না পালাও না পালাও বলি ভীষ্মে ডাকে।। হস্তিনী কারণ যেন ক্রোধে হস্তিবর। ধাইয়া আইল হেন শাল্ব নৃপবর।। ক্রোধেতে আকর্ণ পূরি মহাধনুর্দ্ধর। দিব্য অস্ত্র প্রহারিল ভীষ্মের উপর।। নেউটিয়া ভীষ্মবর নিল শরাসন। শাল্ব ভীষ্ম দুইজনে হৈল মাহারণ।। দুই সিংহ যুখে যেন পর্ব্বত উপর। দুই বৃষে যুঝে যেন গোষ্ঠের ভিতর।। ক্রোধেতে নির্ধূম অগ্নি যেন ভীষ্মবীর। দুই বানে কাটে তার সারথির শির।। চারি অশ্ব কাটিয়া, কাটিল রথধ্বজ। ধনুক কাটিল তার গঙ্গার অঙ্গজ।। অশ্ব রথ সারথি ধনুক কাটা গেল। ভূমে পড়ি দ্রুত শাল্বরাজ পলাইল।। কাতর দেখিয়া তারে দিল প্রাণদান। না মারিল অস্ত্র আর গঙ্গার সন্তান।। সংগ্রাম জিনিয়া তবে চলে মতিমান। কন্যা ল'য়ে নিজ দেশে করিল পয়ান।। আনন্দিত লোক সব হস্তিনাপুরের। বিবাহ উদ্যোগ হৈল বিচিত্রবীর্য্যের।। পুরোহিত লইয়া করিল শুভক্ষণ। বরর নিকটে তিন কন্যা বসাইল।। অম্বা নামে জ্যেষ্ঠ কন্যা তখন কহিল । সর্ব্বশাস্ত্রে বিজ্ঞ তুমি শান্তনু-নন্দন। তোমায় করি যে আমি এক নিবেদন।। সভামধ্যে দেখিয়া সকল রাজগণে। শাল্বরে বরিতে আমি করিয়াছি মনে।। পিতার সম্মতি আছে দিবেন শাল্বেরে। আমারে বিবাহ দেহ আনিয়া তাহারে।। ব্রাম্ভণ-সভাতে কন্যা এমত কহিল। বিচার করিয়া ভীষ্ম তাহারে ত্যাজিল।। পুনর্ব্বার গেল কন্যা শাল্বরাজ স্থান। শাল্বরাজ বলে তোরে না করি গ্রহণ।। কান্দিয়া ভীষ্মের স্থানে পুনঃ সে আইল। তুমি বলে নিলে তেঁই শাল্ব তেয়াগিল।। তবে ভীষ্ম বলে তুমি বড় দুরাচার। পুন না লইব তোরে ধর্ম্মের বিচার।। এত শুনি হৈল কন্যা পরম দুঃখিত। সেইখানে অগ্নিকুণ্ড করিল ত্বরিত।। অগ্নি প্রদক্ষিণ করি করিল প্রবেশ। ভীষ্মের বধের হেতু কামনা বিশেষ।। অম্বালিকা অম্বিকা যুগল সুন্দরী। দোঁহার রূপেতে নন্দে স্বর্গবিদ্যাধরি।। বিচিত্রবীর্য্যেরে সেই দুই কন্যা দিল। শচী তিলোত্তমা যেন দেবেন্দ্র পাইল।। সহজে বিচিত্রবীর্য্য নবীন বয়েস। যুগল কন্যার সহ শৃঙ্গার বিশেষ।। অল্পকালে যক্ষাকাশ তাহার ঘটিল। অনেক উপায় ভীষ্ম তাহার করিল।। বহু যত্ন করি রক্ষা নারিল করিতে। মরিল বিচিত্রবীর্য্য পুত্র না জন্মিতে।। শোকেতে আকুল হৈল যত বধূগণ। বধূ সহ সত্যবতী করেন ক্রন্দন।। তবে সত্যবতী আসি গঙ্গার নন্দনে। কহিতে লাগিল তাঁরা করিয়া ক্রন্দনে।। কুরুকুল মহাবংশ পৃথিবী ঈশ্বর। এ বংশ ধরিতে পুত্র তুমি একেশ্বর।। রাজা হইয়া রাজ্য রাখ পাল প্রজাগণ। পুত্র জন্মাইয়া কর বংশের রক্ষণ।। কুরুকুল অস্ত যায় করহ রক্ষণ। তোমা বিনা রক্ষা হেতু নাহি অন্যজন।। নরক হইতে উদ্ধারহ পিতৃগণে। সর্ব্বশাস্ত্র ধর্ম্ম বাপু জানহ আপনে।। অপুত্রক তব ভাই হইল নিধন। নিঃসন্তান আছে তব ভ্রাতৃবধূগণ।। অবিরোট ধর্ম্ম বাপু আছে পূর্ব্বাপর। পুত্র জন্মাইয়া কর বংশের উদ্ধার।। এতেক শুনিয়া বলে শান্তনু-নন্দন। বেদের সদ্ররশ মাতা তোমার বচন।।