পাতা:কাশীনাথ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাশীনাথ 8bም যাইবার সময় মাতুও সঙ্গে গিয়াছিল। সেই কেবল যাইবার যথার্থ কারণ জানিত । নলিনী মাতুকে বিশেষ করিয়া বলিয়া দিয়াছিল, যেন সে বাটীতে কোন কথা না বলে। নলিনী মনে করিল এ কথা প্ৰকাশ করিলে স্বামীর অপযশ করা হইবে । ভাল হউক। আর মন্দ হউক, তাহার স্বামীকে লোকে মন্দ বলিবার কে ? পিতৃ গৃহে যাইয়া নলিনী পিতামাতার চরণে প্ৰণাম করিল, ছোট ভাইটিকে কোলে লইল, শুধু সে হাসিতে পারিল না। মা বলিলেন, নলিনী আমার একদিনের গাড়ীর পরিশ্রমে একেবারে শুকিয়ে গেছে ; কিন্তু সে শুষ্ক মুখ আর প্রফুল্ল ठूङ्ग्रेब्न मा ! পৃথিবীতে প্ৰায়ই দেখা যায়, একটা সামান্য কারণ হইতে গুরুতর অনিষ্টের উৎপত্তি হয়। শূৰ্পণখার ঈষৎ চিত্ত-চাঞ্চল্যই স্বর্ণলঙ্কা ধ্বংসের হেতু হইয়াছিল। অকিঞ্চিৎকর রূপলালসার জন্য শুধু ট্রয় নগর ধ্বংস হইয়া গেল। মহানুভব রাজা হরিশ্চন্দ্ৰ অতি সামান্য কারণেই অমন বিপদগ্ৰস্ত হইয়াছিলেন ; জগতে এরূপ দৃষ্টান্ত বিরল নহে ; এখানেও একটা সামান্য অভিমানে বিষম বিপত্তি ঘটিয়া উঠিল । সত্যেন্দ্ৰনাথের দোষ দেব কি ? নলিনী কখনো অভিমান করে নাই, স্বামীর কষ্টের কথা মনে করিয়া সে নীরবে সমস্ত সহ কারিত-আর পারিল না । সে ভাবিল, এই ক্ষুদ্র কারণে যে স্বামী কর্তৃক পরিতাক্ত হয়, সে মরে না কেন ? দারুণ অভিমানে নলিনী শুকাইতে লাগিল ; ওদিকে সত্যেন্দ্রর অভিমান ফুরাইয়া গিয়াছে ; একদণ্ড না থাকিলে যাহার চলে না, তাহার এ মিছা, অভিমান কতদিন থাকে ? অভিমান দারুণ কষ্টের কারণ হষ্টয়া দাড়াইয়াছে। সত্যেন্দ্ৰ প্ৰত্যহ চাহিয়া থাকে-আজি হয়ত নলিনীর পত্ৰ আসিবে, হয়ত সে লিখিবে, আমায় লইয়া যাও, সত্যেন্দ্ৰ ভাবে, তাহা হইলে মাথায় করিয়া লইয়া আসিব, আর কখনও এরূপ অন্যায় ব্যবহার করিব না; কিন্তু ভবিতব্য কে অতিক্রম করিবে ? যাহা হইবার তাহা হইবেই। তুমি আমি ক্ষুদ্ৰ প্ৰাণী মাত্র,