পাতা:কাশীনাথ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भनिद्र ক্ৰমে অপর্ণ বড় হইতে লাগিল। হিন্দুর মেয়ে-ঈশ্বরের ধারণা যেমন করিয়া হৃদয়ঙ্গম করে, সেও তাহাই করিতে লাগিল, এবং পিতার নিতান্ত আদরের সামগ্ৰী এই মন্দিরটি যে তাহারও বক্ষশোণিতের মত, এ কথা সে তাহার সমস্ত কৰ্ম্ম ও খেলা-ধূলার মধ্যেও প্ৰমাণ করিতে বসিল । সমস্ত দিন সেই মন্দিরেব কাছাকাছি থাকিত এবং একটি শুষ্ক তৃণ বা একটি শুষ্ক ফলাও সে মন্দিরের ভিতর পড়িয়া থাকা সহ্য করিতে পারিত না । এক ফোটা জল পড়িলে সে সযতনে আঁচল দিয়া তাহা মুছিয়া লইত। রাজনারায়ণবাবুর দেবনিষ্ঠা-লোকে বাড়াবাড়ি মনে করিত, কিন্তু অপর্ণার দেবসেবা-পরায়ণতা সে সীমাও অতিক্ৰম করিতে উদ্যত হইল । সাবেক পুস্পপাত্রে আর ফুল আঁটে না - একটা বড় আসিয়াছে । চন্দনেব পুরাতন বাটীটা বদলাইয়া দেওয়া হইয়াছে। ভোজ্য ও নৈবেদ্যর বরাদ্দ ঢের বাড়িয়া গিয়াছে। এমন কি নিত্য নুতন ও নানাবিধ পুজার আয়োজন ও তাহার নিখুত বন্দোবস্তের মাঝে পীড়য়। বৃদ্ধ পুরোহিত পৰ্য্যন্ত শশব্যস্ত হইয়া উঠিলেন। জমিদার রাজনারায়ণবাবু এ সব দেখিয়া শুনিয়া ভক্তি স্নেহে গাঢ়স্বরে কহিতেন, ঠাকুর আমার ঘরে তঁহার নিজের সেবার জন্য লক্ষ্মীকে পঠাইয়া দিয়াছেন। --তোমরা কেই কিছু বলিয়ো না । 6. যথা সময়ে অপর্ণার বিবাহ হহয়। গেল। মন্দির ছাড়িয়া এইবার যে তাহাকে অন্যত্র যাইতে হইবে, এই আশঙ্কায় তাহার মুখের হাসি অসময়ে শুকাষ্টয়া গেল। দিন দেখান হইতেছে, তাহাকে শ্বশুরবাড়ী যাইতে হইবে। পরিপূর্ণ বিদ্যুৎ বুকে চাপিয়া বর্ষার ঘনকৃষ্ণ মেঘখণ্ড যেমন অবকদ্ধ গৌরবের গুকিভাবে স্থিৰ হইয়া কিছুক্ষণ আকাশের গায়ে বর্ষণোন্মুখ ভাবে Wাড়াইযা থাকে, তেমনি স্থিব হুইয়া একদিন অপর্ণা শুনিল যে সেই দেখান-দিন আজ আসিয়াছে। সে পিতা, নিকট গিয়া কহিল, বাবা, 'আমি ঠাকুর-সেবার যে বন্দোবস্ত করিয়া গেলাম তাহার যেন অন্যথা না হয়। বৃদ্ধ পিতা