পাতা:কাশীনাথ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

। कांौनांथ se ডালা খুলিতে বসিল। ডালার উপরে অপর্ণার নাম সোনার জলে লেখা। এখন একবার সে অপর্ণার মুখখানি দেখিবার জন্য তাহার মুখের দিকে চাহিল, কিন্তু দেখিল মানুষ কাচের নকল চোখ পরিয়া যেমন করিয়া চাহে, তেমনি করিয়া অপর্ণ তাহার পানে চাহিয়া আছে। দেখিয়া তাহার সমস্ত উৎসাহ একনিমিষে নিবিয়া গিয়া যেন অৰ্থহীন একফোটা শুষ্ক হাসির মাঝে আপনাকে লুকাইয়া ফেলিতে চাহিল। লজ্জায় মরিয়া গিয়াও সে বাক্সের ডালা খুলিয়া গোট-কতক কুন্তলিনের শিশি, আরো কি-কি বাহির করিতে উদ্যত হইলে, অপর্ণ বাধা দিয়া কহিল, এনেছ কি আমার জন্য ? অমরনাথের হইয়া আর কে যেন জবাব দিল, হাঁ, তোমার জন্যই এনেছি। দেলখোসগুলো অপর্ণ জিজ্ঞাসা করিল, বাক্সটাও কি আমাকে দিলে ? নিশ্চয়ই । তবে আর কেন মিছে ওসব বের করবে, বাক্সতেই থাক । তা থাক। তুমি ব্যবহার করবে। ত ? অকস্মাৎ অপর্ণা ভ্ৰ কুঞ্চিত করিল। সমস্ত দুনিয়ার সহিত লড়াই করিয়া তাহার ক্ষত-বিক্ষত হৃদয় পরাস্ত হইয়া বৈরাগ্য গ্রহণপূর্বক নিভৃতে চুপ করিয়া বসিয়াছিল, সহসা তাহার গায়ে এই স্নেহের অনুরোধ কুৎসিত বিদ্রেরূপের আঘাত করিল ; চঞ্চল হইয়া সে তৎক্ষণাৎ প্ৰতিঘাত করিল ; বলিল, নষ্ট হবে না, রেখে দাও । আমি ছাড়াও আরও অনেকে ব্যবহার করতে জানে এবং উত্তরের জন্য অপেক্ষা মাত্র না করিয়া অপর্ণ পূজার ঘরে গিয়ে প্রবেশ করিল। আর অমরনাথ-বিহবিলের মত সেই প্ৰত্যাখ্যাত উপহারের উপর হস্ত রাখিয়া সেই ভাবেই বসিয়া রহিল। প্ৰথমে সে সহস্রাবার মনে মনে আপনাকে নির্বোধি বলিয়া তিরস্কার করিল। বহুক্ষণ পরে সে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, অপর্ণা পাষাণী ! তাহার চোখ জলে ভাসিয়া আসিল সেই খানে বসিয়া একভাবে ক্ৰমাগত চক্ষু মুছিতে লাগিল । অপর্ণ তাহাকে যদি সুস্পষ্ট ভাষায় প্রত্যাখ্যান করিত, তাহা হইলে কথাটা