পাতা:কাশীনাথ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Na gरादी যায়, সেইটাই কি ছাই বড় হয়। সত্যেন্দ্ৰনাথও মানুষ। মানুষের স্বভাব কোথায় যাইবে ? এত ভালবাসা, যত্ন ও শান্তির মধ্যে তাহার হৃদয়ে মাঝে মাঝে বিদ্যুতের মত অশান্তি জাগিয়া উঠে । নিমিষের মধ্যে মনের মাঝে বৈদ্যুতিক ক্রিয়ার মত যে বিপ্লব বাধিয়া যায়, তাহ সামলাইয়া লইতে নলিনীর অনেক পরিশ্রমের প্রয়োজন। হয়। মাঝে মাঝে তাহার মনে হয়, বুঝি আর সে সামলাইতে পরিবে না। এত দিনের চেষ্টা, যত্ন, অধ্যবসায় সমস্তই বুঝি বিফল হইয়া যাইবে । নলিনীর এতটুকু ত্রুটি দেখিলে, সত্যেন্দ্ৰ ভাবে সরলা থাকিলে বোধ হয় এমনটি হইত না । হাইত কি না ভগবান জানেন, হয়ত হইত না ; হয়ত ইহা অপেক্ষা চতুগুণ হইত ; কিন্তু তাহাতে কি ? সে মৎস্য যে পলাইয়া গিয়াছে! সত্যেন্দ্ৰ এখনও সরলাকে ভুলিতে পারে নাই। কাছারী হইতে আসিয়াই যদি নলিনীকে সে না দেখিতে পায়, আমনই মনে করে কিসে আর কিসে । নলিনী বড় বুদ্ধিমতী, সে সর্বদা স্বামীর নিকটে থাকে, কারণ সে জানিত, এখনও তিনি সরলাকে ভুলেন নাই। একেবারে ভুলিয়া যান, এ ইচ্ছা নলিনীর কখনও মনে হয় না ; তবে অনৰ্থক মনে করিয়া কষ্ট না পান এই জন্যই সে সৰ্ব্বদ। কাছে থাকিস্ত, যায় করিত। নাই ভুলুন, কিন্তু তাহাকে ত অযত্ন করেন না-ইহাই নলিনীর ঢের। গোপীকান্ত রায় পাবনার একজন সন্ত্রান্ত উকীল । কলিকাতায় তঁহার বাটী, নলিনীদের বাটীর কাছে । কি একটা সম্বন্ধ থাকায় নলিনী ভঁাহাকে কাক বলিয়া ডাকে। রায়খুড়িমা প্ৰায় প্রত্যহই সত্যেন্দ্রর বাটী বেড়াইতে আসেন ; গোপীবাবুও প্ৰায় আসেন। গ্রাম-সম্পর্কে খুড়-শ্বশুরকে সত্যেন্দ্ৰনাথ অতিশয় মান্য করেন। সত্যেন্দ্রর বাসা তাহার বাটী হইতে দূরে হইলেও উভয় পরিবারে বেশ মেলামেশা হইয়া গিয়াছে। নলিনীও মধ্যে মধ্যে কাকার বাড়ী বেড়াইতে যায়, কারণ একে কাকার বাড়ী তাহাতে গোপীবাবুর কন্যা হেমার সহিত তাহার বড় ভাব, বাল্যকালের সখী, কেহ কাহাকে ছাড়িতে চাহে না । সেদিন। তখন বারটা বাজিয়া গিয়াছে। সত্যেন্দ্ৰ কাছারী চলিয়া গিয়াছে,