পাতা:কাহিনী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৬০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সতী
৫৭

জীবাজির প্রসারিত বরহস্ত হতে
বিবাহের রাত্রে ভোরে, বঞ্চিয়া কপোতে
শ্যেন যথা লয়ে যায় কপোতবধূরে
আপনার ম্লেচ্ছ নীড়ে, সে দুষ্ট দস্যুরে
পতি কোস তুই! সে রাত্রি কি মনে পড়ে?
বিবাহ সভায় সবে উৎসুক অন্তরে
বসে আছি-শুভলগ্ন হল গতপ্রায়,
জীবাজি আসে না কেন সবাই শুধায়,
চায় পথপানে। দেখা দিল হেনকালে
মশালের রক্তরশ্মি নিশীথের ভালে,
শুনা গেল বাদ্যরব। হর্ষে উচ্ছ্বসিল
অন্তঃপুরে হুলুধ্বনি। দুয়ারে পশিল
শতেক শিবিকা; ‘কোথা জীবাজি কোথায়’
শুধাতে না শুধাতেই, ঝটিকার প্রায়
অকস্মাৎ কোলাহলে হতবুদ্ধি করি
মুহূর্তের মাঝে তোরে বলে অপহরি
কে কোথা মিলালো। ক্ষণপরে নতশিরে
জীবাজি বন্ধনমুক্ত এল ধীরে ধীরে-
শুনিনু কেমনে তারে বন্দী করি পথে
লয়ে তার দীপমালা, চড়ি তার রথে,
কাড়ি লয়ে পরি তার বরপরিচ্ছদ
বিজাপুর-যবনের রাজসভাসদ্‌
দস্যুবৃত্তি করি গেল। সে দারুণ রাতে
হোমাগ্নি করিয়া স্পর্শ জীবাজির সাথে