পাতা:কাহিনী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
কাহিনী

ভয় করি । শুনিয়া সগর্ব্বে মহারাজ
কহিলেন—নাহি হেন সুকঠিন কাজ
পারি না করিতে যাহা ক্ষত্রিয় তনয়—
কহিলাম স্পর্শি তব পাদপদ্মদ্বয়।
শুনিয়া কহিনু মৃদু হাসি’,—হে রাজন্‌
শুন তবে। আমি করি যজ্ঞ-আয়ােজন,
তুমি হােম কর দিয়ে আপন সন্তান।
তারি মেদ-গন্ধ-ধূম করিয়া আঘ্রাণ
মহিষীরা হইবেন শত পুত্রবতী—
কহিনু নিশ্চয়।—শুনি নীরব নৃপতি
রহিলেন নত শিরে। সভাস্থ সকলে
উঠিল ধিক্কার দিয়া উচ্চ কোলাহলে।
কর্ণে হস্ত রুধি কহে যত বিপ্রগণ
ধিক্ পাপ এ প্রস্তাব।—নৃপতি তখন
কহিলেন ধীরস্বরে—তাই হবে প্রভু,
ক্ষত্রিয়ের পণ মিথ্যা হইবে না কভু।
তখন নারীর আর্ত্ত বিলাপে চৌদিক্‌
কাঁদি উঠে, —প্রজাগণ করে ধিক্ ধিক্‌,
বিদ্রোহ জাগাতে চায় যত সৈন্যদল
ঘৃণাভরে। নৃপ শুধু রহিলা অটল ।
জ্বলিল যজ্ঞের বহ্নি। যজন সময়ে
কেহ নাই,—কে আনিবে রাজার তনয়ে
অন্তঃপুর হতে বহি। রাজভৃত্য সবে
আজ্ঞা মানিল না কেহ। রহিল নীরবে