পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SY9e কিয়ার দল বাড়ীতে আসতো যেতো, ওর সাথে গল্প করতো।--কেবল বিয়ের প্ৰস্তাবের পরে তাকে আর বেশী দেখা যেতো না । এতদিন পরে দেশে এসে বীণাদের বাড়ী যাওয়া একটা কৰ্ত্তব্য বটে, বীণার সঙ্গে দেখা করাও উচিত। কিন্তু যদি দ্বীণার মা পুরোণে প্ৰস্তাবটী আবার পাড়েন ? এখন তো চাকুরী করচে, এখন কোন ওজার থাকবার কথা তো নয় । অথচ বীণাকে বিয়ে করবারও ইচ্ছা নেই। গাড়াগায়ের মেয়ে না জানে লেখাপড়া, না জানে গান, না জানে। ভালো করে কথা কইতে। অবস্থাও খারাপ ওর বাপের রামাকে দেখবার পরে ওর মনে হয়েচে, এমন ধরণের মেয়েকে জীবনসঙ্গিনীরূপে লাভ করা একটা সৌভাগ্য। দেখবার মত মেয়ে ; তার মায়েরও আন্তরিক ইচ্ছা তার বিয়ে হয়। রামার সঙ্গে । প্ৰমোদের মা যখন পরদিন সকালে কথাটা পাড়লেন, গোকুল তখন মায়ের কথাটাই বড় করে বল্লে। তার কোন হাত নেই। আচ্ছা, কলকাতায় গিয়ে মাকে জানাবে, পরে কি হয়। পত্র লিখবে। বীণা বোধহয় তখন জানালা ধরে নিঃশব্দে এসে দাড়িয়েছিলওর কথা শেষ হতেই চলে গেলা-কেউ টের পায়নি, কখন যে এসেছিল পাশের ঘরে-গোকুলের চোখ এড়ালো না। তারপর যখন ওদের বাড়ী থেকে বার হয়ে আসে, তখন বীণার সঙ্গে আবার দেখা হো’’ল বাড়ীর বাহিরে গোয়ালের দরজায়। গরুর দড়ি হাতে বীণা ওদের ছোট্ট বাছুরটা পেয়ারা গাছের গুড়িতে বাধচে। পরণে আধ্যময়লা শাড়ী, গাছকতক কঁাচের চুড়ি হাতে, শ্যামবর্ণ মেয়ে, দেখতে এমন কিছু নয় ; ওকে দেখে বীণা লজ্জায় চোখ তুলে যেন ভাল করে চাইতে পারলে না ; কারণ " তার আগেই বীণা শুনেচে মায়ের মুখে বিয়ের প্রস্তাবটা।