পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क्द्रि पक्ष আর কারো গলার-ওর কুমায়ী জীবনের আনন্দভরা, দিনগুলির কত ? অবসর প্রহর যে এ কষ্ঠের সুরে মধুময় ! ও পাগলের মত ছুটে ঘরের বাইরে এসে দাঁড়ালে। রাত অনেক। কৃষ্ণাস্তৃতীয়ার চাদ মাথার ওপর পৌছেচে। ফুটফুটে শরতের জ্যোৎস্নায় বঁাশবনের তলা পৰ্য্যন্ত আলো হয়ে উঠেছে । ঠিক যেন তিন বছর আগেকার সেই মহাষ্টমীর রাত্রির মত । শাস্তির মা ইতিমধ্যে জেগে উঠে বল্লেন, ও কে গান করছে রে শান্তি ? তারপর তিনিও তাড়াতাড়ি বাইরে এলেন। শ্ৰীপতিদের বাড়ী তো কেউ থাকে না, গান গাইবে কে ? ওদিকে মন্টর মা, মণি’ বাদল সবাই জেগেছে দেখা গেল। প্রথমটা এরা সবাই ভয়ে বিস্ময়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। পরে ব্যাপারটা বোঝা গেল। শ্ৰীপতি কখন রাতের টেণে বাড়ী এসেছিল, কেউ লক্ষ্য করেনি। সে কলের গান বাজাচ্ছে। ওদের সাড়া পেয়ে সে বাহিরে এসে বল্লে-আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে আজ চেয়ে আনলুম ওর গানখানা। মরবার ক’মাস আগে রেকর্ডে গেয়েছিল। সবাই খানিকক্ষণ চুপ করে দাড়িয়ে রইল। শান্তি প্ৰথমে সে নীরবতা ভঙ্গ করে আস্তে আস্তে বল্লে-ছিক্কিাদা, রেকর্ডাখানা আর একবার দেবে ? পরীক্ষণেই একটি অতি সুপরিচিত, পরমপ্রিয়, সুললিত কণ্ঠের দরদ ভরা সুরপুঞ্জে পাড়ার আকাশ বাতাস, স্তব্ধ জ্যোৎস্না রাত্রিটা ছেয়ে গেল। মানুষের মনের কি ভুলই যে হয়! অল্পক্ষণের জন্যে শান্তির মনে হোল তার কুমারী জীবনের মুখের দিনগুলি আবার ফিরে এসেছে, যেন বৌদিদি। মরেনি, কিন্তুরের দল ভেঙ্গে যায় নি, সব বজায় আছে। এই তো সামনে আসছে পুজো, আবার মহাষ্টমীতে তাদের থিয়েটার হবে, বৌদিদি গান গাইবে। গান থামিয়ে ওর দিকে চেয়ে হাসি হাসি মুখে বলবেকেমন শান্তি ঠাকুরঝি, কেমন লাগলো!