পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

किचन प्रल ክነቅ নিঃশ্বাস ফেলবে। আর কঁদবে। বাছার আমার অকল্যাণ হবে তাও বুড়ো মাগী ভুলে যায়।” “পাগল!” আমি হাসতে লাগলুম। “ঐ তো ! তুমি সব কথা উড়িয়ে দাও কেবল। কপাল যখন পােড়া তখন অপরের ছেলেমেয়েদের ওপর নজর দেওয়া কেন ৰাপু ?” বিজু আমার কাছ থেকে চলে যায়— আমি ওসব বিশ্বাস করি না। বলেই হয় তো ! আমার মাথার মধ্যে বিজুর সেই শেষ কথা কেবল ভাসতে লাগলো, “কপালপোড়া”। বাস্তবিকই কি কমলার কপাল পোড়া -বিধাতাপুরুষ তার প্রতি অপ্ৰসন্ন ? এই রুগ্ন মেয়ে প্রসব করার জন্যে দোষী কে ? কমলা ? একটুও নয়। আমি জানি কমলার স্বামীর দুরারোগ্য সিফিলিস রোগ বৰ্ত্তমান। একথাও জানি যে, সেই মহাপুরুষ প্রায়ই রাত্ৰিবেলা বাড়ী ফেরেন না। বাপ ঠাকুরদা। অনেক পয়সা জমিয়ে গেছে। তাই ব্যয় করে করে সে ফুরিয়ে উঠতে পারছে না। তবুও লোকে দোষ দেবে কমলাকে। আমার স্ত্রী অন্ধ-বধির, সে অকারণ পুরুষদের প্রতি সৰ্ব্বদাই সদয়, কমলার স্বামীর দোষ সে দেখে না। কারণ পুরুষ পুরুষের শত্ৰু, আর নারী নারীর শত্রু। এ হেন কমলা শানি হবার দিন সাতেক পরে প্রায় একটি প্রাণহীন মাংসপিণ্ড প্রসব করে। নিজের ব্যর্থতার বেদনায় মুষড়ে পড়ে কমলা কঁদিলো, চীৎকার করলো-দু’দিন বিছানা থেকে উঠলো না, খেল না-চোখ ফুলিয়ে ফেলুলো কেঁদে কেঁদে। তারপর একদিন নজর প’ল শানির ওপর। শানির পানে তাকিয়ে ওর ব্যর্থতার কথা পুনরায় স্মরণ হােল, পুনরায় যেন কে ওর ক্ষতে আঘাত করলে, নিজের অজ্ঞাতসারে একটি ব্যথিত দীর্ঘ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলে। আমার স্ত্রী শিউরে উঠলো। সে শানিকে নিয়ে সেখান থেকে চলে এল অযথা । সেই দিন থেকে শানিকে কমলা ভালবাসলে।