পাতা:কুমার সম্ভব (কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য্য).pdf/৫৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪৮
কুমারসম্ভব।

 হে নাথ! আমি ত তোমার অনুমরণ করিবই করিব, কিন্তু তথাপি আমার এই এক নিন্দা রহিয়া গেল যে মদনের মৃত্যুর পর রতি ক্ষণকালও জীবিত ছিল॥ ২১॥

 তুমি পরলোকে গিয়াছ, এখন তোমার মৃতদেহের বেশ ভূষা বিধান করা পর্য্যন্ত আমার অসাধ্য হইতেছে। কারণ কেবল তোমার প্রাণ নয়, তোমার দেহ পর্য্যন্ত যে কোথায় চলিয়া গিয়াছে তাহার নিরূপণ নাই॥ ২২॥

 হায়! তুমি যখন আপন ক্রোড়ে ধনুক খানি রাখিয়া বাণগুলিকে সরল করিতে এবং বসন্তের সঙ্গে হাসিয়া হাসিয়া যে কথা কহিতে, আর মধ্যে মধ্যে আমার প্রতি যে কটাক্ষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে, সে সমস্ত বৃত্তান্ত আমার স্মৃতিপথে উপস্থিত হইতেছে॥ ২৩॥

 তোমার প্রেমাস্পদ বন্ধু সেই বসন্তই বা কোথায়, তিনিই যে পুষ্প দ্বারা তোমার ধনুক নির্ম্মাণ করিয়া দিতেন। প্রচণ্ডকোপশালী শিব কেমন তাঁহাকেও ত তাঁহার বন্ধুর পথে প্রেরণ করেন নাই॥ ২৪॥

 বসন্তের হৃদয়ে এই সকল বিলাপ বাক্য বিষ-লিপ্ত বাণের ন্যায় আঘাত করিল। তিনি শোকাতুর রতিকে সান্ত্বনা দিবার নিমিত্ত এই সময়ে দেখা দিলেন॥ ২৫॥

 বসন্তকে দেখিয় রতি আরো রোদন করিতে লাগিলেন, এবং স্তনদ্বয়ে বেদনা জন্মে এই রূপে বক্ষস্থলে করাঘাত করিতে লাগিলেন। কারণ আত্মীয় ব্যক্তিকে দর্শন করিলে দুঃখস্রোতের যেন কপাট উদ্ঘাটন হইয়া যায়॥ ২৬॥