পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬]
কুরু পাণ্ডব
৯৩

 এই কথা বলিয়া অর্জ্জুন রথারােহণপূর্ব্বক রাজকুমারকে কোরবসৈন্যাভিমুখে লইয়া চলিলেন। উত্তর অকুতােভয়ে বলিতে লাগিলেন—

 হে বৃহন্নলে! সত্বর কৌরবগণের সমীপে রথ উপনীত কর। আমি সেই দুরাত্মাদিগকে উপযুক্ত শাস্তি দিব।

 এই কথা শ্রবণে অর্জ্জুন অতি দ্রুতবেগে অশ্বচালনা করিয়া শ্মশান সমীপস্থ সেই সমীবৃক্ষের নিকট উপস্থিত হইলেন। সেস্থান হইতে সাগরোপম কৌরববল দৃষ্ট হইতে লাগিল। তখন রাজকুমার শ্রেষ্ঠ মহারথ-রক্ষিত সেই বিপুল কুরুসৈন্য অবলােকন করিয়া রােমাঞ্চিত কলেবরে ভয়াদ্বিগ্নচিত্তে বলিতে লাগিলেন—

 হে সারথে! ইহাদের সহিত আমি একাকী কি প্রকারে যুদ্ধ করিব? এই বীর-পরিরক্ষিত সৈন্যদল স্বয়ং দেবগণেরও অজেয় বলিয়া বোধ হয়। যুদ্ধ করা দূরে থাক্‌, ইহাদিগকে দেখিয়াই আমার অন্তঃকরণ নিরুৎসাহ ও শরীর অবসন্ন হইতেছে। পিতা আমাকে শূন্য গৃহে রাখিয়া সমগ্র সৈন্যসামন্ত লইয়া প্রস্থান করিয়াছেন, আমি একাকী এক্ষণে কি করিব?

 অর্জ্জুন তাঁহাকে সাহসপ্রদানার্থে কহিলেন—

 হে কুমার! এক্ষণে কাতর হইয়া শত্রুগণের হর্ষবর্দ্ধন করিও না। উহারা কি করিয়াছে যে, তুমি ইতিমধ্যেই ভীত হইতেছ! তুমি যাত্রাকালে সকলের সমক্ষে যেরূপ গর্ব্ব করিলে তাহার পর গো লইয়া না ফিরিলে স্ত্রী পুরুষ