হে বৃহন্নলে! তুমি শীঘ্র রথ প্রতিনিবৃত্ত কর। আমি তােমাকে বহু ধন প্রদান করিব।
তখন রাজকুমারকে ভয়ে মূর্ছিতপ্রায় দেখিয়া অর্জ্জুন তাহাকে সহাস্যবদনে কহিলেন—
হে বীর! তােমার যদি যুদ্ধ করিতে উৎসাহ না হয়, তবে তুমি সারথি হইয়া রথ-চালনা কর। তােমার কিছুমাত্র শঙ্কা নাই, আমি স্বীয় বাহুবলে তােমাকে রক্ষা করিব।
উত্তর এই কথায় কিঞ্চিৎ আশ্বস্ত হইয়া রথ-চালনায় প্রবৃত্ত হইলেন। ছদ্মবেশী অর্জ্জুনকে রথারােহণ করিতে দেখিয়া ভীষ্ম-দ্রোণাদি মহারথিগণের তাঁহার প্রকৃতপরিচয়সম্বন্ধে আর সংশয় রহিল না। এদিকে নানাবিধ দুর্নিমিত্তও দৃষ্ট হইতে লাগিল। তখন ভীষ্মকে দ্রোণ বলিতে লাগিলেন―
আজ দেখিতেছি পার্থের হস্তে আমাদিগকে পরাজিত হইতে হইবে। আমাদের মধ্যে এমন কেহই নাই, যে তাঁহার প্রতিদ্বন্দ্বী হইতে পারে। তাহাতে কর্ণ কহিলেন—
হে আচার্য্য। আপনি সর্ব্বদাই অর্জ্জুনের প্রশংসা এবং আমাদের নিন্দা করিয়া থাকেন, কিন্তু আমি ও দুর্য্যোধন একত্র হইলে অর্জ্জুনের কি সাধ্য আমাদের পরাজয় করে!
দুর্য্যোধন এই কথায় প্রীত হইয়া কহিলেন—
হে কর্ণ! যদি এই স্ত্রীবেশধারী বাস্তবিকই অর্জ্জুন হয়, তবে তাে বিনা যুদ্ধেই আমাদের মনােরথ পূর্ণ হইবে; কারণ প্রতিজ্ঞাত ত্রয়ােদশ বর্ষ শেষ হইবার পূর্ব্বে আমরা তাঁহার পরিচয় পাইলে পাণ্ডবগণকে পুনরায় দ্বাদশ বৎসর বনবাসে