পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
কুরু পাণ্ডব
[৬

 অনন্তর বিরাটনন্দন পার্থের আদেশানুসারে দ্রোণাচার্য্যের প্রতি রথচালনা করিলেন। তুল্যবীর গুরুশিষ্যের সঙ্ঘটনে সকলে বিস্মিত হইয়া নিরীক্ষণ করিতে লাগিল এবং সৈন্যদল হইতে মহা শঙ্খধ্বনি উত্থিত হইল। অর্জ্জুন প্রথম গুরুদর্শনে মহানন্দসহকারে তাঁহাকে অভিবাদনপূর্ব্বক বিনয় বাক্যে কহিলেন—

 হে সমরদুর্জ্জয়! আমরা বনবাসজনিত বহুকষ্ট ভােগ করিয়া এক্ষণে কৌরবগণের শত্রুপক্ষের মধ্যে গণ্য হইয়াছি; অতএব আমাদের প্রতি রুষ্ট হইবেন না। আপনি প্রথমে প্রহার না করিলে আমি আপনার সহিত যুদ্ধ করিতে পারিব না, অতএব আপনি প্রথমে বাণত্যাগ করুন।

 অনন্তর দ্রোণ অর্জ্জুনের প্রতি বাণত্যাগ করিলে অর্জ্জুন পথেই তাহা খণ্ডখণ্ড করিয়া ফেলিলেন। তখন দ্রোণার্জ্জুনের সমরকৃত্য আরম্ভ হইল। উভয়েই মহারথী, উভয়েই দিব্যাস্ত্রবিশারদ, সকলে স্তম্ভিত হইয়া তাঁহাদের অদ্ভুত কর্ম্ম দর্শন করিতে লাগিল।

 কৌরবগণ বলিলেন—অর্জ্জুনব্যতীত কেহই আচার্য্যের সমকক্ষ হইতে পারিত না, ক্ষত্রিয় ধর্ম্ম কি ভয়ানক যে, পার্থকে গুরুর সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইতে হইল।

 এদিকে বীরদ্বয় সম্মুখবর্ত্তী হইয়া পরস্পরকে শরজালে সমাবৃত ও ক্ষত বিক্ষত করিতে লাগিলেন। দ্রোণাচার্য্য অর্জ্জুনের অভ্রান্ততা লঘুহস্ততা ও দূরপাতিতা অবলােকন করিয়া বিস্ময়াপন্ন হইলেন। অনন্তর সব্যসাচী ক্রমেই