পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬]
কুরু পাণ্ডব
১০১

উত্তপ্ত হইয়া দুই হস্তে এতবেগে বাণবর্ষণ আরম্ভ করিলেন যে, কখন্ শরগ্রহণ করিতেছেন, কখন্ নিক্ষেপ করিতেছেন, তাহা কাহারও দৃষ্টিগোচর হইল না। সৈন্যগণ আচার্য্যকে অর্জ্জুন-বাণে একান্ত সমাচ্ছন্ন দেখিয়া হাহাকার করিতে লাগিল। তখন অশ্বত্থামা সহসা অর্জ্জুনের প্রতি ধাবমান হইয়া তাঁহার মনােযোগ বিক্ষিপ্ত করিয়া দ্রোণাচার্যকে প্রস্থান করিবার অবসর প্রদান করিলেন।

 ইতিমধ্যে কর্ণ কথঞ্চিৎ বিশ্রান্ত হইয়া পুনরায় সমরক্ষেত্রে আগত হইলেন।

 জয়শীল অর্জ্জুন তাঁহার প্রতি বর্ম্মভেদী বাণবর্ষণ আরম্ভ করিলেন। তিনি প্রথমত শরাঘাতে কর্ণের তূণীররজ্জু ছেদন করিলেন। তখন কর্ণ অপর তূণ হইতে বাণগ্রহণপূর্ব্বক অর্জ্জুনের হস্তবিদ্ধ করিলে ক্ষণকালের নিমিত্ত তাঁহার মুষ্টি শিথিল হইল। পরে ক্রুদ্ধ হইয়া তিনি কর্ণের শরাসন ছেদন করিলেন এবং তৎক্ষিপ্ত অন্যান্য অস্ত্রসমুদায় নিবারণ করিলেন। কর্ণকে এইরূপে অস্ত্রহীন করিয়া সৈন্যদল আগত হইবার পূর্ব্বেই অর্জ্জুন তাঁহার অশ্ব বিনষ্ট করিয়া বক্ষঃস্থলে সুতীক্ষ্ণ বাণ বিদ্ধ করিলেন। তাহাতে কর্ণ পুনরায় বিকলেন্দ্রিয় হইয়া ধরাতলে পতিত ও বিচেতন হইলেন এবং ক্ষণকালপরে সংজ্ঞালাভপুর্ব্বক বেদনায় অধীর হইয়া রণক্ষেত্র ত্যাগ করিলেন।

 অনন্তর পুর্ব্বপরাজিত যোদ্ধৃগণ বারবার সমরক্ষেত্রে প্রত্যাবৃত্ত হইয়া কখনও পৃথক্ পৃথক্‌, কখনও ধর্ম্মযুদ্ধ পরি-