পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
কুরু পাণ্ডব
[৮

 হে কৌরবগণ! আমি বারবার বিলাপ করিতেছি, তথাপি আমার মন্দমতি পুত্রগণ যুদ্ধসঙ্কল্প পরিত্যাগ করিতেছে না। বৎস দুর্য্যোধন! তুমি কি নিমিত্ত সমগ্র পৃথিবী অধিকার করিবার দুরভিলাষ পোষণ করিতেছ? তদপেক্ষা পাণ্ডবদিগকে তাহাদের প্রাপ্যাংশ প্রত্যর্পণ করিয়া সুখে আপন রাজ্য পালন কর। পাপযুদ্ধে লিপ্ত হইলে কুরুকুল সমূলে ধ্বংস হইবে। আমি অহোরাত্র এইরূপ চিন্তায় বিহ্বল হইয়া নিদ্রাসুখে বঞ্চিত হইতেছি, এই নিমিত্তই আমি সন্ধিস্থাপনে সমুৎসুক।

 মহাবীর কর্ণ ধার্ত্তরাষ্ট্রগণের হর্ষোৎপাদন করিয়া কহিলেন—

 হে মহারাজ! আমি দিব্যাস্ত্রবেত্তা মহাত্মা পরশুরামের নিকট অস্ত্রশিক্ষা করিয়াছি। আমিই এই যুদ্ধে পাণ্ডবপ্রধানগণকে বিনাশ করিবার ভার গ্রহণ করিলাম।

 কর্ণের এই আত্মশ্লাঘাই দুর্য্যোধনের দুঃসাহস এবং তজ্জনিত সমস্ত অনর্থের মূল বিবেচনা করিয়া মহামতি ভীষ্ম অনিবার্য্য ক্রোধে কর্ণকে তীব্র ভৎসনা করিয়া কহিতে লাগিলেন—

 হে কাল-হত-বুদ্ধি কর্ণ। পাণ্ডবদিগকে সংহার করিবে বলিয়া তুমি সর্ব্বদাই অহঙ্কার করিয়া থাক। বিরাটনগরে যখন ধনঞ্জয় তোমার প্রিয় ভ্রাতাকে সংহার করিলেন, তখন তুমি কি করিতেছিলে? যখন অর্জ্জুন সমস্ত কৌরবগণকে অচেতন করিয়া তাঁহাদের উত্তরীয় সকল হরণ করিলেন,