পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮]
কুরু পাণ্ডব
১২৫

 অনন্তর রােরুদ্যমানা কৃষ্ণা স্বীয় রমণীয় কুটিলাগ্র কুন্তলদাম হস্তে ধারণপূর্ব্বক কহিলেন—

 হে কেশব! যখন কৌরব-সভায় শান্তির প্রস্তাব হইবে, তখন পাষণ্ড দুঃশাসনের হস্ত-কলুষিত এই কেশের কথা স্মরণ রাখিও।

 কৃষ্ণ তখন দ্রোপদীকে সান্ত্বনা দিয়া কহিলেন—

 হে কল্যাণি! তুমি এখন যেরূপ রোদন করিতেছ, অতি অল্পদিনের মধ্যেই কৌরব-মহিলাগণকে সেইরূপ রোদন করিতে দেখিবে। হে কৃষ্ণে! বাষ্প সম্বরণ কর। তোমার পতিগণ অচিরেই শত্রু-সংহারপূর্ব্বক রাজ্যলাভ করিবেন।

 এইরূপ কথােপকথনে সে রাত্রি অতিবাহিত হইল। পরদিন প্রভাতে যদুবংশাবতংস কৃষ্ণ হস্তিনাপুর যাত্রার আয়োজন করিতে আরম্ভ করিলেন। ব্রাহ্মণগণের মাঙ্গল্যপুণ্য নির্ঘোষ শ্রবণান্তে স্নান করিয়া বসন-ভূষণ পরিধানপূর্ব্বক তিনি সূর্য্য ও বহ্নির উপাসনা করিলেন। তদনন্তর সাত্যকিকে কহিলেন—

 হে যুযুধান! আমার রথমধ্যে শঙ্খ চক্র গদা ও অন্যান্য অস্ত্রসকল সুসজ্জিত কর। দুর্য্যোধন শকুনি ও কর্ণ অতি দুরাত্মা, অতএব তাহাদের পাপাভিসন্ধির নিমিত্ত প্রস্তুত থাকা কর্ত্তব্য।

 কৃষ্ণের অভিপ্রায় জ্ঞাত হইয়া সাত্যকি রথসকল উপযুক্ত রূপে অস্ত্রসজ্জিত করিলেন। অনন্তর সকালের নিকট বিদায় লইয়া সাত্যকিসহ কৃষ্ণ স্বীয় রথে আরােহণ করিলে দশ