পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮]
কুরু পাণ্ডব
১৩৭

রথ-চালনার আদেশ প্রদান করিলে রথ উপপ্লব্য অভিমুখে প্রধাবিত হইল।

 কুরু-সভা ভঙ্গ হইলে শান্তির আশা সম্পূর্ণ পরাহত জানিয়া বিদুর অতিশয় চিন্তাকুলিত চিত্তে ইতস্তত পরিভ্রমণ করিতে করিতে অবশেষে কুন্তীর ভবনে উপস্থিত হইয়া তাঁহার নিকট মনােবেদনা নিবেদন করিতে লাগিলেন―

 হে কুন্তি! তুমি ত জান, আমি যুদ্ধের কি পর্য্যন্ত বিরােধী ছিলাম, আমি কায়মনোবাক্যে শান্তির নিমিত্ত চেষ্টা করিলাম, কিন্তু কিছুই ফল হইল না। ধর্ম্মাত্মা পাণ্ডবগণ সহায়সম্পন্ন হইয়াও দীনের ন্যায় সন্ধি প্রার্থনা করিলেন, তথাপি দুর্য্যোধনের তাহাতে অভিরুচি হইল না। যে ঘোরযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হইয়া পড়িয়াছে, তাহার ফল যে কি পর্য্যন্ত শােচনীয় হইতে পারে, তাহা ভাবিয়া আমি দিবানিশি নিদ্রাসুখে বঞ্চিত হইতেছি।

 মনস্বিনী কুন্তী বিদুরের বাক্য শ্রবণে একান্ত দুঃখিত হইলেন এবং দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগপূর্ব্বক চিন্তা করিতে লাগিলেন। অবশেষে তিনি কর্ণকে দুর্য্যোধনের প্রধান নির্ভর স্থল জানিয়া জন্মবৃত্তান্ত জ্ঞাপনপূর্ব্বক তাঁহাকে পাণ্ডবদের প্রতি প্রসন্ন করিবার সঙ্কল্প করিলেন। কর্ণ পুত্র হইয়া কি নিমিত্ত তাঁহার হিতকর বাক্য উপেক্ষা করিবে?― এই কল্পনায় আশ্বস্ত হইয়া তিনি এই উদ্দেশ্যে ভাগীরথীতীরে গমন করিলেন।

 তথায় দেখিলেন স্বীয় আত্মজ সত্যপরায়ণ মহাতেজা