পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯]
কুরু পাণ্ডব
১৪১

রহিলেন। অন্যান্য বীরগণ তাঁহাকে বেষ্টন করিয়া সৈন্যের পশ্চাদ্ভাগে অবস্থান করিলেন।

 কুরুক্ষেত্রে উপস্থিত হইয়া অর্জ্জুন এবং বাসুদেব তাঁহাদের ভীষণরব শঙ্খদ্বয় বাদন করিলে যােদ্ধাগণ অতিশয় উৎসাহিত হইয়া প্রত্যেকে স্ব স্ব শঙ্খে ঘোরতর নিনাদ করিলেন। অনন্তর যুধিষ্ঠির পরিভ্রমণপূর্ব্বক শ্মশান, দেবালয়, আশ্রমাদি স্থানসকল পরিহার করিয়া পবিত্র সলিলযুক্ত হিরণ্বতী নামক স্রোতস্বতী-সেবিত তৃণ-ইন্ধন-সম্পন্ন এক সমতল ভূমি সেনানিবেশের নিমিত্ত নির্ব্বাচন করিলেন।

 তথায় কিয়ৎকাল বিশ্রামান্তে গতক্লম হইয়া তিনি মহীপালসকল-সমভিব্যাহারে চতুর্দ্দিক্ পর্য্যটন ও শিবিরাদি সংস্থাপনের উপযুক্ত স্থান পরিদর্শন করিতে লাগিলেন। ধৃষ্টদ্যুম্ন ও সাত্যকি শিবিরের পরিমাণ স্থির করিলে কৃষ্ণ চতুর্দ্দিকে পরিখা খনন করাইয়া তথায় অদৃশ্যভাবে রক্ষক সৈন্যদল সংস্থাপন করিলেন। প্রথমে পাণ্ডবগণের শিবিব প্রস্তুত হইলে অন্যান্য নৃপতিগণ পরে নিজ নিজ শিবির যথাস্থানে সন্নিবেশিত করিলেন।

 প্রত্যেক শিবিরে অস্ত্রশিল্পী ও সুচিকিৎসক-সকল নিযুক্ত হইল। এবং ধর্ম্মরাজের আদেশক্রমে তন্মধ্যে প্রভূত পরিমাণে শরাসন, জ্যা, বর্ম্ম ও সকলপ্রকার শস্ত্রসমূহ, তদ্ব্যতীত তৃণ তুষ, অঙ্গার, মধু, ঘৃত, উদক এবং বিবিধপ্রকারের ক্ষতনিবারণী ঔষধ রক্ষিত হইল। পাণ্ডবগণ এইরূপে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হইয়া যুদ্ধকাল প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন।