পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫২
কুরু পাণ্ডব
[১০

 নকুল-সহদেব কহিলেন―মহারাজ। তুমি জ্যেষ্ঠ হইয়া আমাদিগকে পরিত্যাগ করিতেছ ইহাতে আমরা একান্ত ব্যথিত হইতেছি; অতএব ইহার অর্থ কি আমাদের নিকট প্রকাশ কর।

 কিন্তু যুধিষ্ঠির কাহাকেও কোন উত্তর প্রদান না করিয়া একমনে ভীষ্মের রথাভিমুখে চলিলেন। তখন কৃষ্ণ ঈষৎ হাস্যসহকারে বলিয়া উঠিলেন―

 হে পাণ্ডবগণ! তোমরা চিন্তিত হইও না, আমি যুধিষ্ঠিরের অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়াছি, গুরুজনদের অনুমতি না লইয়া তাঁহার যুদ্ধারম্ভের প্রবৃত্তি হইতেছে না।

 এই অদ্ভুত দৃশ্য অবলোকনে কৌরবদলের মধ্যে নানারূপ কথােপকথন হইতে লাগিল। কেহ কেহ বলিল—

 এই ক্ষত্রিয়-কুল-কলঙ্ক যুধিষ্ঠির নিশ্চয়ই ভীত হইয়া শরণ গ্রহণার্থে ভীষ্মের সমীপে আগমন করিতেছে। আহা! মহাবীর ভ্রাতৃগণকে লজ্জা দিয়া কাপুরুষ যুধিষ্ঠির কি প্রকারে এরূপ দুষ্কার্য্য করিতেছে।

 এই ভাবের কথা কুরুসেনামধ্যে চতুর্দ্দিকে রাষ্ট্র হওয়ায় সৈন্যগণ পাণ্ডবদিগকে ধিক্কার প্রদান ও ধার্ত্তরাষ্ট্রগণকে প্রশংসা করিয়া মহাহর্ষে পতাকা বিকশিত করিতে লাগিল।

 অনন্তর যুধিষ্ঠির ভীষ্মের নিকটবর্ত্তী হইলে তিনি কি বলেন, ভীষ্মই বা কি উত্তর করেন, শুনিবার জন্য সকলে তূষ্ণীম্ভাব অবলম্বন করিল। তখন মহারাজ যুধিষ্ঠির সেই আয়ুধসঙ্কুল শত্রুদলমধ্যে ভ্রাতৃগণসহ প্রবেশপূর্ব্বক সংগ্রামার্থ