পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৮
কুরু পাণ্ডব
[১০

মদ্রাধিপতি শল্যের প্রতি ধাবিত হইলেন। উত্তরের মহাগজ শরাঘাতে ক্রুদ্ধ হইয়া শলের রথের যূগকাষ্ঠ আক্রমণপূর্ব্বক তাঁহার অশ্বগণকে পদাঘাতে বিনষ্ট করিল। তখন ভীষণযোদ্ধা শল্য সেই বাহনবিহীন রথেই অবস্থান করিয়া এক লৌহময় শক্তি গ্রহণপূর্ব্বক উত্তরের গাত্রে তাহা নিক্ষেপ করিলেন। সেই শক্তি উত্তরের বর্ম্ম ভেদ করিয়া তাঁহার মর্ম্মস্থলে প্রবিষ্ট হইলে বিরাটতনয় চতুর্দ্দিক্ অন্ধকারময় দেখিয়া গজস্কন্ধ হইতে নিপতিত হইয়া প্রাণত্যাগ করিলেন। তখন মদ্ররাজ খড়্গ গ্রহণপূর্ব্বক সেই হস্তীকে বিনষ্ট করিয়া কৃতবর্ম্মার রথে আরোহণ করিলেন।

 প্রিয়সম্বন্ধযুক্ত বিরাটতনয়ের এই শোচনীয় মৃত্যুতে পাণ্ডবগণ নিতান্ত ভগ্নোৎসাহ ও বিষণ্ণ হইলেন। সেই সুযোগে কৌরবগণ বহুসংখ্য পাণ্ডবযোদ্ধা বিনষ্ট করিতে লাগিলে তাহাতে পাণ্ডবসেনামধ্য হইতে মহান্ হাহাকার সমুত্থিত হইল।

 এই অবস্থায় মরীচিমালী অস্তগমনোন্মুখ হইল। পাণ্ডবসেনাপতি অর্জ্জুন কৌরবগণকে নিতান্ত পরাক্রান্ত দেথিয় সৈন্যগণকে অবহারার্থে আদেশ করিলেন। এইরূপে ভীষণ যুদ্ধের প্রথম দিবস অবসান হইল।

 অনন্তর প্রভাত হইলে দৃঢ়ব্যূহিত পাণ্ডবসৈন্যের অগ্রভাগে সেনাপতি অর্জ্জুনের ভীষণ কপিধ্বজ লক্ষিত হইল। সেনাধ্যক্ষগণ ব্যূহের দুই পক্ষে অবস্থান করিলেন এবং মধ্যে ও পশ্চাতে অগণ্য মহারথসকল সজ্জিত হইলেন। চতুর্দ্দিকে