পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০]
কুরু পাণ্ডব
১৬৩

 দুর্য্যোধনের এই বাক্য শ্রবণে ভীষ্ম ক্রোধভরে নয়নদ্বয় বিঘূর্ণনপূর্ব্বক কহিলেন—

 হে রাজন! পাণ্ডবগণ যে দুর্জ্জয়-পরাক্রমশালী এ কথা তোমাকে আমি পূর্ব্ব হইতেই বার বার বলিয়াছি। যাহা হোক, আমি যে স্বীয় কর্ত্তব্য অবহেলা করিতেছি না, তাহা তুমি স্বচক্ষে অবলােকন কর।

 এই বলিয়া ভীষ্ম পুনরায় তরঙ্গায়িত মহাসমর-সাগরে অবগাহনপুর্ব্বক অতি আশ্চর্য্য কর্ম্মসকল সম্পাদন করিতে লাগিলেন। তাঁহার মণ্ডলীকৃত শরাসন হইতে আশীবিষসদৃশ দীপ্তাগ্র শরনিকর মহাবেগে চতুর্দ্দিকে পতিত হইয়া পাণ্ডবপক্ষীয় মহারথগণকে নিপাতিত করিতে লাগিল। সমরাঙ্গণস্থ বীরগণ ভীষ্মকে এই পূর্ব্বদিকে, এই পশ্চিমে, পরে উত্তরে এবং মুহুর্ত্তমধ্যে দক্ষিণে সন্দর্শন করিয়া বিস্মায়াপন্ন ও ভয়বিহ্বল হইলেন। এইরূপে পাণ্ডবসৈন্য নিহত হইতে থাকিলে ক্রমে সকলে অর্জ্জুনের সমক্ষেই পলায়নে প্রবৃত্ত হইল।

 মহাতেজা কৃষ্ণ তাহা সহ্য করিতে না পারিয়া অর্জ্জুনকে ধিক্কার প্রদানপূর্ব্বক কহিলেন—

 হে ধনঞ্জয়! যদি মুগ্ধ না হইয়া থাক, তবে অবিলম্বে ভীষ্মকে প্রহার কর। ঐ দেখ, সিংহের ভয়ে ক্ষুদ্র মৃগের ন্যায় ভূপতিগণ ভীষ্মের প্রতাপে ইতস্তত পলায়ন করিতেছেন। তুমি সমরক্ষেে থাকিতে ইহা শোভন হইতেছে না।

 এই বলিয়া বাসুদেব অর্জ্জুনের রথ ভীষ্মের সম্মুখীন