পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
কুরু পাণ্ডব
[১০

করিতে ব্যূহমুখের নিকটবর্ত্তী হইলে তাঁহাদের রক্ষিত শিখণ্ডির রথ ভীষ্মের রথসমীপে অগ্রসর হইবার পথ প্রাপ্ত হইল। তখন অর্জ্জুন কহিলেন—

 —হে শিখণ্ডি। এই সুযোগে ভীষ্মের প্রতি ধাবমান হও, অন্য কোন চিন্তায় এক্ষণে প্রয়োজন নাই।

 —এই বাক্যানুসারে শিখণ্ডি ভীষ্মকে প্রাপ্ত হইয়া তাঁহার বক্ষঃস্থলে নিশিত বাণসকল বিদ্ধ করিতে লাগিলেন। কিন্তু আপনার পিতা তাঁহার প্রতি অবজ্ঞাদৃষ্টি করিলেন মাত্র। সকলেই দেখিতে পাইলেন যে, ভীষ্ম শিখণ্ডিকে কোনরূপ প্রত্যাখাত না করিয়া পূর্ব্ববৎ অন্যান্য যোদ্ধৃগণের উপর বাণ বর্ষণ করিতে থাকিলেন।

 —কিন্তু শিখণ্ডি এ বৃত্তান্ত বুঝিতে পারেন নাই। যাহাতে বুঝিবার অবসর না প্রাপ্ত হন, এই নিমিত্ত অর্জ্জুন ক্রমাগত উৎসাহবাক্যে তাঁহাকে উত্তেজিত করিয়া কহিতে লাগিলেন—

 ―হে শিখণ্ডি! এক্ষণে ভীষ্মকে বিনাশ করিতে যত্নবান্ হও। তোমা ব্যতীত এ বৃহৎ সৈন্যমধ্যে আর এমন যোদ্ধা দেখি না, যে এই মহৎকার্য্য সাধনের উপযুক্ত। অদ্য তুমি নিষ্ফল হইলে আমরা উভয়েই হাস্যাস্পদ হইব।

 ―তখন শিখণ্ডি বলমদোন্মত্ত চিত্তে ভীষ্মকে শরজালে আবৃত করিলেন, কিন্তু এই লঘুবাণে আপনার পিতা কিছুমাত্র ব্যথিত না হইয়া হাস্যসহকারে তাহা শরীরে ধারণ ও অবিচলিত উৎসাহে পাণ্ডবসৈন্য বিনাশ করিতে লাগিলেন। শিখণ্ডিকে অর্জ্জুনবাণে সুরক্ষিত দেখিয়া দুর্য্যোধন কহিলেন―