পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০]
কুরু পাণ্ডব
১৮১

দুর্য্যোধন কাহাকে অবলম্বন করিবেন? হে সঞ্জয়! পুত্রের বিনাশজন্য মহাশােকানল আমার অন্তঃকরণে আরূঢ় হইয়াছিল, তুমি যেন ঘৃতদ্বারা সেই অগ্নি উদ্দীপিত করিয়া দিলে। এক্ষণে সেই যুদ্ধেরভূষণ ভীম কর্ম্মা পিতার নিধনবার্ত্তা শুনিয়া আমার আর বাঙ্‌নিষ্পত্তির শক্তি নাই।

 এদিকে কুরুসেনাপতি ভীষ্ম শরশয্যায় শয়ান হইলে, কৌরবগণ ইতিকর্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া কিয়ৎক্ষণ পরস্পরের মুখাবলােকন করিতে লাগিলেন। অনন্তর দুঃশাসন জ্যেষ্ঠের নিয়োগানুসারে ত্বরিত্রগমনে দ্রোণাচার্য্যের বিভাগ অভিমুখে গমন করিলেন। তিনি কি অভিপ্রায়ে ধাবমান হইতেছেন জানিবার জন্য বহুসংখ্যক যোদ্ধা তাঁহাকে বেষ্টন করিয়া চলিলেন।

 অনন্তর দ্রোণ-সন্নিধানে উপস্থিত হইয়া দুঃশাসন তাঁহাকে ভীষ্মের পতনবার্ত্তা কহিবামাত্র সেই অপ্রিয় সংবাদ শ্রবণে আচার্য্য সহসা মূর্চ্ছিত হইয়া রথােপরি পতিত হইলেন। পরে সংজ্ঞা লাভ করিয়া তৎক্ষণাৎ দূতদ্বারা স্বীয় সৈন্যবিভাগ নিবারিত করিলেন। পাণ্ডবগণও শঙ্খধ্বনি-দ্বারা যুদ্ধকার্য্য স্থগিত করলেন।

 সৈন্যগণ নিবৃত্ত হইলে উভয়পক্ষীয় বীরগণ কবচ ও অস্ত্র পরিত্যাগ-পুর্ব্বক ভীষ্মের নিকট সমাগত হইয়া অভিবাদন পূর্ব্বক চতুর্দ্দিকে দণ্ডায়মান রহিলেন। তখন কুরুপিতামহ সকলকে সম্বোধনপূর্ব্বক কহিলেন―

 হে মহাভাগগণ! তোমাদের স্বাগত? আমি তােমাদের দর্শনে অতিশয় পরিতুষ্ট হইলাম।