পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
১৯৯

নিপীড়িত মৃগের ন্যায় পলায়ন করিতে লাগিল। শল্যের কনিষ্ঠ ভ্রাতা জ্যেষ্ঠকে ব্যথিত দেখিয়া অভিমন্যুকে আক্রমণ করিলে লঘুহস্ত অর্জ্জুন-তনয় এককালে তাঁহাকে, তাঁহার সারথিকে এবং চক্ররক্ষক-দ্বয়কে সংহার করিলেন।

 তখন বহুসংখ্যক যােদ্ধা কেহ অশ্বে কেহ রথে কেহ গজে একসঙ্গে অভিমন্যুকে আক্রমণ করিলে তিনি কিছুমাত্র শঙ্কিত না হইয়া হাস্যমুখে তাহাদের মধ্যে যে অগ্রসর হইল, তাঁহাকেই নিপাতিত করিলেন।

 পরে মহাবীর অর্জ্জুন-নন্দন সমরাঙ্গণে পরিভ্রমণ করিয়া দ্রোণ, কর্ণ, কৃপ, শল্যপ্রভূতি ভূপতিগণকে বাণ-বিদ্ধ করিতে আরম্ভ করিলে তাঁহার লঘুচারিত্বপ্রযুক্ত তাঁহাকে একই সময়ে চতুর্দ্দিকে বর্ত্তমান বলিয়া বােধ হইতে লাগিল। দুর্য্যোধন ক্রুদ্ধ হইয়া কহিতে লাগিলেন—

 হে ভূপগণ! দেখ, শিষ্য-পুত্র অভিমন্যুকে আচার্য্য স্নেহবশত নিধন করিতে ইচ্ছা করিতেছেন না। তিনি বধােদ্যত হইলে এই বালক কখনই নিস্তার পাইত না। অর্জ্জুন-পুত্র দ্রোণকর্ত্তৃক রক্ষিত হইয়া আপনাকে বীর্য্যবান্ জ্ঞান করিতেছে; অতএব এই পৌরুষাভিমানী মূঢ়কে শীঘ্র সংহার কর।

 এই বাক্য শ্রবণে দুঃশাসন দর্পভরে কহিলেন—

 যেমন রাহু দিবাকরকে গ্রাস করে, আমি তদ্রূপ সকলের সমক্ষেই অভিমন্যুকে সংহার করিব।

 এই বলিয়া তিনি উচ্চৈঃস্বরে ধ্বনি করিয়া ক্রোধভরে