পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০২
কুরু পাণ্ডব
[১১

উহাকে ব্যথিত করিবার অণুমাত্র অবসর প্রাপ্ত হইতেছেন না, ইহাতে আমি শিষ্যপুত্রের প্রতি একান্ত প্রসন্ন হইয়াছি। উহার শরজালে আমি ব্যথিত হইয়াও সন্তুষ্ট হইতেছি।

 কর্ণ কহিলেন―হে আচার্য্য। সমর পরিত্যাগ করা নিতান্তই লজ্জাকর বলিয়াই আমি এস্থানে এখনও অবস্থান করিতেছি। এই মহাতেজা অর্জ্জুন-কুমারের দারুণ শরনিকরে আমার শরীর অতিশয় দগ্ধ হইয়াছে।

 তখন মহাবীর দ্রোণাচার্যয় হাস্যসহকারে কহিলেন―

 হে রাধেয়। এই অভিমন্যুর কবচ অভেদ্য। উহার বন্ধনকৌশল আমিই উহার পিতাকে শিক্ষা দিয়াছিলাম; অতএব তোমরা বৃথা বাণ-বর্ষণ করিতেছ। যদি উহাকে পরাজয় করিবার বাসনা থাকে, তবে দ্বৈরথ-যুদ্ধ পরিত্যাগ করিয়া তোমরা সম্মিলিত হইয়া প্রথমে উহাকে নিরস্ত্র ও বিরথ কর, পশ্চাৎ সংগ্রাম করিও। উহার হস্তে অস্ত্র থাকিতে উহাকে পরাজয় করা তোমাদের সাধ্য নয়।

 দ্রোণ-বাক্য শ্রবণমাত্র সকলে সত্বর একত্র হইয়া কেহ অভিমন্যুর ধনু, কেহ অশ্ব, কেহ সারথি, কেহ কেহ উহার নিক্ষিপ্ত অস্ত্রসমুদায় ছেদন করিতে—দ্রোণ, কর্ণ, কৃপ, অশ্বত্থামা ও কৃতবর্ম্মা কারুণ্যশূন্য হইয়া এককালে সেই বালককে প্রহার করিতে আরম্ভ করিলেন।

 তখন অভিমন্যু খড়্গচর্ম্ম-ধারণপূর্ব্বক অশ্বহীন রথ হইতে লম্ফ প্রদান করিলে দ্রোণ তাঁহার খড়্গ ও কর্ণ তাঁহার চর্ম্ম ছেদন করিলেন। একে একে সকল অস্ত্র বিনষ্ট হইলে