পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কুরু পাণ্ডব
১৩

 দারুণ অবমাননাকালে এইরূপে মর্য্যাদা রক্ষা হওয়ায় কর্ণ দুর্য্যোধনের প্রতি যৎপরোনাস্তি কৃতজ্ঞ হইলেন। তাঁহাকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন-

 মহারাজ! রাজাদানের অনুরূপ তোমার কোনো প্রত্যুপকার করিবার আমার সাধ্য নাই। তবে আমার সাধ্য অনুসারে যাহা বলিবে, আমি তাহাই করিতে প্রস্তুত আছি।

 দুর্য্যোধন প্রীতিসহকারে কহিলেন—

 হে অঙ্গরাজ! এক্ষণে তোমার সহিত চিরসখ্য স্থাপন করিবার ইচ্ছা করি।

 কর্ণ তথাস্তু, বলিয়া তাহা স্বীকার করলেন এবং যাবজ্জীবন ক্ষণকালের নিমিত্তও এ প্রতিজ্ঞার তিনি অন্যথাচরণ করেন নাই।

 এই সময়ে রাজ-সূত অধিরথ, অর্জ্জুনের সহিত কর্ণের বিবাদের কথা শ্রবণ করিয়া যুদ্ধ নিবারণ উদ্দেশে ঘর্ম্মাক্তকলেবর ও স্খলিতোত্তরচ্ছদ হইয়া সহসা রঙ্গমধ্যে প্রবেশ করিলেন। মহাবীর কর্ণ পিতৃতুল্য সারথির গৌরব-রক্ষার্থ শরাসন পরিত্যাগপূর্ব্বক তাহাকে সভাস্থ সকলের সমক্ষে প্রণাম করিলেন। অধিরথ কর্ণকে অক্ষত দেখিয়া আনন্দ ভরে তাঁহাকে পুত্রসম্বোধনপূব্বক তাঁহার অভিষেক মস্তক পুনর্ব্বার আনন্দাশ্রুপাতে অভিষিক্ত করিলেন।

 ইহা অবলোকন করিয়া ভীমসেন বিদ্রূপবাক্যে কহিলেন-

 হ সূতনন্দন! যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জ্জুনের মত বীরের হস্তে প্রাণ বিসর্জ্জন করিতে শসা তোমার পক্ষে সুযুক্তির কার্য্য হয়