পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৪
কুরু পাণ্ডব
[১১

করিতে আরম্ভ করিলেন, তখন সকলে একান্ত বিস্ময়াবিষ্টচিত্তে চতুর্দ্দিক্ হইতে সিংহনাদ করিতে আরম্ভ করিল।

 কৃষ্ণ কহিলেন—হে পার্থ! কি আশ্চর্য্য! তোমার বাণসকল ব্যর্থ দেখিয়া আমি অতিশয় বিস্মিত হইতেছি। আজ কি পূর্ব্বাপেক্ষা গাণ্ডীবের অথবা তােমার মুষ্টির বা বাহুদ্বয়ের বলহানি হইয়াছে?

 অর্জ্জুন কহিলেন―হে বাসুদেব! নিশ্চয়ই আচার্য্য দুর্য্যোধনের গাত্রে কবচ বন্ধন করিয়াছেন, সে কবচের বন্ধন গুরু কেবল আমাকেই শিক্ষা দিয়াছিলেন। মনুষ্য-নিক্ষিপ্ত বাণের কথা দূরে থাক্, ইন্দ্রের অশনিতেও উহা বিভিন্ন হইবার নহে। কিন্তু স্ত্রীলােকের ন্যায় দুর্য্যোধন কেবল যেন গাত্রের শােভার্থে এই কবচ ধারণ করিয়াছে, সে ইহার উপযুক্ত যুদ্ধপ্রণালী কিছুই অবগত নহে, অতএব সে এখনি আমার ভুজবল অবগত হইবে।

 এই বলিয়া ধনঞ্জয় বর্ম্মভেদ-চেষ্টা পরিত্যাগ করিয়া দুর্য্যোধনের শরমুষ্টি ও শরাসন ছেদন এবং অশ্ব ও সারথি বিনাশপুর্ব্বক তাঁহার রথ খণ্ড খণ্ড করিয়া ফেলিলেন। তখন দুর্য্যোধনের রক্ষার্থে অসংখ্য কৌরব-সৈন্য তথায় উপস্থিত হইয়া অর্জ্জুনের গতিরােধ করিল।

 দিবার শেষভাগে অর্জ্জুনকে এইরূপে অবরুদ্ধ দেখিয়া ধূলিধূসরিত ও ঘর্ম্মাক্ত-কলেবর বাসুদেব সাহায্যের নিমিত্ত বার বার পাঞ্চজন্য শঙ্খে প্রবল ধ্বনি করিতে আরম্ভ করিলেন।

 খুধিষ্ঠির ভীমের নিকট উপস্থিত হইয়া কহিলেন―