পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৮
কুরু পাণ্ডব
[১১

 এই সময়ে কর্ণ বিশেষ অবসর প্রাপ্ত হইয়া ও কুন্তীর নিকট স্বীয় প্রতিজ্ঞা স্মরণপূর্ব্বক ভীমসেনকে সংহার করিলেন না। তিনি ভীমের আশ্রয়স্বরূপ গজদেহ ছিন্ন করিয়া রথগমনের পথ নির্মাণপূর্ব্বক তাঁহাকে প্রাপ্ত হইলেন এবং ধনুষ্কোটিদ্বারা প্রহারপূর্ব্বক সহাস্যবদনে কহিলেন―

 অহে ভীম! তুমি অস্ত্রবিদ্যা কিছুমাত্র অবগত নহ, রণস্থল তোমার উপযুক্ত স্থান নহে। মাদৃশ ব্যক্তির সহিত যুদ্ধ করতে গেলে এরূপ অবস্থা ঘটিয়া থাকে।

 ভীম অঙ্গস্পৃষ্ট সেই কর্ণের কার্ম্মুক তৎক্ষণাৎ আচ্ছিন্ন করিয়া তদ্দারা তাঁহাকে প্রতি প্রহার করিয়া কহিলেন—

 আরে মূঢ় স্বয়ং ইন্দ্রের জয় এবং পরাজয় উভয়ই হইয়া থাকে। আমিও তোমাকে ইতিপূর্ব্বে বহুবার পরাজয় করিয়াছি, তবে কেন বৃথা শ্লাঘা করিতেছ? তুমি একবার আমার সঙ্গে মল্লযুদ্ধে প্রবৃত্ত হও, তাহা হইলে তোমার প্রকৃত পৌরুষ বুঝা যাইবে।

 কিন্তু কর্ণ সকলের সমক্ষে তাহাতে পশ্চাৎপদ হইয়া স্বস্থানে প্রস্থান করিলেন।

 অর্জ্জুন যখন দুস্তর সৈন্যসাগর পার হইয়াছিলেন, সে সময়ে তাঁহার চক্ররক্ষকদ্বয় তাঁহার সহিত উত্তীর্ণ হইতে পারেন নাই। এক্ষণে যুধামন্যু ও উত্তমৌজা সৈন্যমণ্ডলীর বহির্ভাগ দিয়া অর্জ্জুনের অনুসন্ধানে তথায় উপস্থিত হইলেন। রথহীন ভীম ও সাত্যকি তাঁহাদের একরথে আরোহণ করিয়া অর্জ্জুনের অনুসরণ করিলেন। তখন জয়দ্রথ-বেষ্টনকারী