পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২২৩

নিষ্কৃতি নাই। যাহা হৌক পাণ্ডবগণ সহ পাঞ্চাল-সৈন্য আমাকে আক্রমণ করিতে আসিতেছে; অতএব এক্ষণে আমি তােমার বাক্য-শল্যে একান্ত পীড়িত হইলেও প্রাণপণ যুদ্ধ করিতে চলিলাম, তুমিও সাধ্যমত সৈন্যরক্ষাকার্য্যে মনােযােগ কর।

 এই বলিয়া দ্রোণাচার্য্য ব্যথিত-মনে পাণ্ডব-সৈন্যের প্রতি ধাবিত হইয়া যুধিষ্ঠিরকে আক্রমণ করিলেন। দ্রোণ-শরে সৈন্যগণকে নিপীড়িত দেখিয়া ভীমার্জ্জুন কৌরব-সৈন্যমধ্যে প্রবেশপূর্ব্বক আচার্য্যকে নিবারণ করিলেন।

 তখন যে অসংখ্য বীর-নিপাতন ভয়ঙ্কর সংগ্রাম উপস্থিত হইল তন্মধ্যে সকল শব্দের উপর গাণ্ডীবের ভীষণ নিস্বন ঘন ঘন শ্রুত হইতে লাগিল। ভীমসেন ধার্ত্তরাষ্ট্রের প্রতি নারাচ সন্ধানপূর্ব্বক তাহাদিগকে বজ্রাহত পাদপের ন্যায় ভূতলপাতিত করিতে লাগিলেন। মহাধনুর্দ্ধর সাত্যকিও স্বীয় বিক্রম প্রদর্শন করিতে ত্রুটি করেন নাই। তিনি বিবিধ প্রকার শরযুদ্ধ আরম্ভ করিয়া বিশিখদ্বারা বীরগণের মস্তক এবং ক্ষুরপ্রদ্বারা গজ সমুদায়ের শুণ্ড ও অশ্বগণের গ্রীবা ছেদন করিলেন। তাহাদের চীৎকার শব্দে সমাগত ঘোররূপা রজনী ভীষণতর হইয়া উঠিল।

 তদ্দৃষ্টে রাজা দুর্য্যোধন কর্ণকে কহিলেন—

 হে মিত্রবৎসল! ঐ দেখ ইন্দ্রতুল্য পরাক্রমশালী পাণ্ডব ও পাঞ্চালগণ হৃষ্টচিত্তে সিংহনাদ করিতেছে। এক্ষণে তুমি অস্মৎপক্ষীয় যােদ্ধৃগণকে পরিত্রাণ কর।