পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৫
কুরু পাণ্ডব
২২৫

 অরাতি-ঘাতন নিশাচর ঘটোৎকচ এই বলিয়া কর্ণের সহিত তুমুল সংগ্রাম আরম্ভ করিল। কর্ণ কোন ক্রমে ঘটোৎকচকে অতিক্রম না করিতে পারিয়া দিব্যাস্ত্র বিস্তার করিলেন। তদ্দর্শনে ঘটোৎকচ রাক্ষসী মায়া পরিগ্রহপূর্ব্বক ভয়ঙ্কর শস্ত্রধারী রাক্ষস-সৈন্যেরদ্বারা পরিবৃত হইল। সেই নিশাচরগণ রাত্রিপ্রভাবে সমধিক বীর্য্যশালী হইয়া শিলাবর্ষণ আরম্ভ করিয়া কৌরবগণকে বিশেষরূপে ব্যথিত করিল।

 একমাত্র কর্ণ অবিচলিতচিত্তে সেই রাক্ষসী মায়া নিরাকৃত করিতে যত্নবান্ হইলেন। রাক্ষসগণ মায়াযুদ্ধ বিফল দেখিয়া অস্ত্রবর্ষণের দ্বারা কর্ণকে সংহার করিতে চেষ্টা করিল। ঘন ঘন নিক্ষিপ্ত শর শক্তি শূল গদা চক্র প্রভৃতিতে কৌরবগণ আক্রান্ত ও অভিভূত হইতে লাগিলেন। অশ্বগণ ছিন্ন, কুঞ্জরগণ প্রমথিত ও শিলঘাতে রথসমুদায় নিস্পিষ্ট হইল।

 অবশেষে অস্ত্রজালসমাচ্ছন্ন কর্ণ ব্যতীত কেহই রণস্থলে অবস্থান করিতে পারিল না। কিন্তু মহাবীর ঘটোৎকচ যখন এক শতঘ্নী নিক্ষেপ করিয়া এককালে কর্ণের অশ্বচতুষ্টয় বিনাশ করিল, তখন বিরথ রাধেয় কৌরবগণকে পলায়মান এবং ঘটোৎকচকে জয়শীল অবলােকন করিয়া তৎকালােচিত কর্ত্তব্য চিন্তা করিতে লাগিলেন। চতুর্দ্দিক্ হইতে কাতরস্বরে কৌরবগণ অনুনয় করিতে লাগিলেন—

 হে সূতনন্দন। কৌরবসেনা বুঝি অদ্যই সমূলে বিনষ্ট হয়। তুমি সত্বর বাসবদত্ত শক্তি প্রয়ােগে এই নিশাচরকে