পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২২৭

ময়ে ইন্দ্রের নিকট এই শক্তি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তদবধি তিনি তোমার বিনাশনিমিত্ত তাহা সযত্নে রক্ষা করিয়াছিলেন। —হে পার্থ! অদ্য কর্ণ শক্তিশূন্য হওয়ায় উহাকে নিপতিত জ্ঞান করিতে পার। এই নিমিত্ত আমি তোমাকে নিষেধ করিয়া নিশাচরকে উহার সহিত যুদ্ধার্থে প্রেরণ করিয়াছিলাম। যতদিন তোমার মৃত্যুস্বরূপ এই শক্তির প্রতিকার করিতে পারি নাই, ততদিন আমার নিদ্রা ও হর্ষ তিরােহিত হইয়াছিল। শদ্য মার কৌশল সফল হওয়ায় আনন্দ করিতেছি।

 ―যাহা হৌক, এক্ষণে আমাদের সৈন্যগণ হাহাকার-রবে ইতস্তত পলায়ন করিতেছে, বােধ হয় মহাবীর দ্রোণ তাহাদিগকে আক্রমণ করিয়াছেন; অতএব হে অনিন্দম! তুমি তাঁহাকে নিবারণ কর।

 তখন যুধিষ্ঠিরের আজ্ঞাক্রমে সমগ্র যােদ্ধৃগণ দ্রোণজিগীযু, হইয়া অর্জ্জুনের সহিত মহাবেগে ধাবমান হইলেন। রাজা দুর্য্যোধন তদৃষ্টে রোষাবিষ্টচিত্তে আচার্য্যের রক্ষার্থে কৌররগণকে নিয়োগ করিলেন। কিন্তু উভয়পক্ষের শ্রান্তবাহন বীরগণ রাত্রি অধিক হওয়ায় নিদ্রালু হইয়াছিলেন, সুতরাং নিশ্চেষ্টবৎ যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। সেনাপতি অর্জ্জুন তাঁহাদিগকে তদবস্থ দেখিয়া উচ্চৈঃস্বরে কহিলেন—

 হে সেনাগণ! তোমরা অন্ধকারে সমাবৃত ও নিতান্ত পরিশ্রান্ত হইয়াছ; অতএব কিয়ৎক্ষণ যুদ্ধ হইতে নিবৃত্ত হইয়া এই রণভূমিতেই নিদ্রা যাও।