পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩০
কুরু পাণ্ডব
[১১

অনুরোধে অনন্যোপায় যুধিষ্ঠির অতিকষ্টে উহাতে সম্মত হইলেন। অনুন্তর কিংকর্ত্তব্য অবধারিত হইলে তদনুসারে ভীমসেন অবন্তি-রাজের অশ্বত্থামা নামক এক গজ সংহারপুর্ব্বক অতি লজ্জিত মনে দ্রোণ-সমীপে গমন করিয়া―অশ্বত্থামা নিহত হইয়াছে—বলিয়া চীৎকার করিতে আরম্ভ করিলেন।

 দ্রোণাচার্য্য সেই দারুণ শোক সংবাদ শ্রবণমাত্র অতিশয় বিষণ্ণচিত্ত হইলেন। কিন্তু পুত্রকে অমিত-পরাক্রমশালী জানিয়া তিনি ধৈর্য্যাবলম্বনপূর্ব্বক এই সংবাদের সত্যতা সমর্থনের প্রতীক্ষায় ধৃষ্টদ্যুম্নের সহিত যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। তখন কৃষ্ণ পুনরায় যুধিষ্ঠিরকে কহিলেন—

 হে রাজন! যদি আচার্য্য রোষপরবশ হইয়া এইরূপে আর অর্দ্ধদিন যুদ্ধ করেন, তবে নিশ্চয়ই তোমার সমুদায় সৈন্যদল নিঃশেষিত হইবে; অতএব তুমি স্বয়ং দ্রোণকে অশ্বথামার মৃত্যু-সংবাদ পুনরায় না জানাইলে আমাদের আর উপায় নাই। প্রাণরক্ষার্থে মিথা কহিলে পাপস্পর্শ হয় না। ভীমের কথায় আচার্য্য অনাস্থা প্রদর্শন করিয়াছেন, কিন্তু তুমি কহিলে তিনি নিশ্চয়ই বিশ্বাস করিবেন।

 ধর্ম্মরাজ যুধিষ্ঠির ভবিতব্যের আনুল্লঙ্ঘনীয়তা উপলব্ধি করিয়া এবং আচার্য্যকে নির্মমভাবে ধর্ম্মাধর্ম্ম-নির্ব্বিচারে সৈন্যসংহারে প্রবৃত্ত দেখিয়া কৃষ্ণের উপদেশপালনে সম্মত হইলেন। কিন্তু দ্রোণ-সমীপে উপস্থিত হইয়া জয়াভিলাষ এবং মিথ্যাকথনভয়ে যুগপৎ আক্রান্ত হইয়া তিনি—অশ্বত্থামা