পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৪
কুরু পাণ্ডব
[১১

তাঁহার নারাচ-প্রহরে অবসন্ন হইয়া ভীষণ শব্দসহকারে চতুর্দদিকে পরিভ্রমণ করিতে আরম্ভ করিল এবং পদাতিগণ দলে দলে বিনষ্ট হইতে লাগিল।

 স্বীয় সৈন্যদলকে এইরূপে নিপীড়িত দেখিয়া পরিশেষে নকুল কর্ণের প্রতি ধাবিত হইয়া তাঁহাকে ও তাঁহার সারথিকে বিদ্ধ করিলেন। তখন মহাবীর কর্ণ ক্রোধাবিষ্ট হইয়া ভীষণতর আকার ধারণপূর্ব্বক নকুলকে শরনিকরে সমাচ্ছন্ন করিয়া তাঁহার শরাসন ছেদন করিলেন, এবং তিনি অন্য ধনু গ্রহণ করিবার পূর্ব্বেই তাঁহার সারথি ও অশ্ব বিনষ্ট করিয়া তাঁহার অস্ত্রশস্ত্রসমুবেত রথ খণ্ড খণ্ড করিয়া ফেলিলেন। নকুল রথহীন ও অস্ত্রশূন্য হওয়ায় নিজেকে নিরুপায় দেখিয়া পলায়ন করিতে লাগিলেন। তখন সূতপুত্র হাস্যপূর্ব্বক পশ্চাদ্ধাবিত হইয়া তাঁহার গলদেশ জ্যা-রােপিত কার্ম্মুকদ্বারা আকর্ষণপূর্ব্বক সেই রুদ্ধকণ্ঠ যােদ্ধাকে কহিলেন―

 হে মাদ্রী-নন্দন! তুমি আমার সহিত বৃথা যুদ্ধ করিতে আসিয়াছিল। যাই হৌক এক্ষণে লজ্জিত হইবার প্রয়ােজন নাই; কিন্তু আর মহাবলপরাক্রান্ত কৌরবদেৱ সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইও না।

 মহাবীর কর্ণ তৎকালে নকুলকে অনায়াসে সংহার করিতে পারিতেন; কিন্তু কুন্তীর নিকট স্বীয় প্রতিজ্ঞা স্মরণপূর্ব্বক তিনি মাদ্রী-তনয়কে পরিত্যাগ করিয়া পাঞ্চালগণের প্রতি ধাবিত হইলেন এবং চক্রাকারে পরিভ্রমণ করিয়া