পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৩৫

তাহাদিগকে মর্দ্দন করিতে লাগিলেন। তখন পাঞ্চাল-সারথিগণ চক্রধ্বজ বা অক্ষবিহীন রথে জীবিতাবশিষ্ট রথিগণকে লইয়া পলায়ন করিতে আরম্ভ করিল।

 এইরূপে বীরবর সূতপুত্রের সায়কপ্রভাবে যুদ্ধে প্রবৃত্ত যোধগণের দুর্দ্দশার আর পরিসীমা রহিল না। অর্জ্জুন এতক্ষণ স্থানান্তরে সংসপ্তকগণের সহিত যুদ্ধে ব্যাপৃত ছিলেন। কৃষ্ণ পাণ্ডব-সেনাকে অতিশয় বিচলিত পলায়নপর দেখিয়া কহিলেন—

 হে ধনঞ্জয়! তুমি কি বৃথ। ক্রীড়া করিয়া সময় নষ্ট করিতেছ? সত্বর এই সংসপ্তকগণকে নিপাতিত করিয়া কর্ণ-বধের চেষ্টা কর।

 মহাবীর অর্জ্জুন কৃষ্ণের বাক্যে উত্তেজিত হইয়া দানবহন্তা বল প্রকাশপূর্ব্বক অবশিষ্ট সংসপ্তকগণকে আক্রমণ করিলেন। তিনি যে কখন শরগ্রহণ কখন শরসন্ধান আর কখনই বা শরনিক্ষেপ করিতে লাগিলেন, তাহ অবহিত হইয়াও কেহ জানিতে পারিল না। বাসুদেবও অর্জ্জুনের হস্তলাঘব দর্শনে চমৎকৃত হইলেন।

 অনন্তর সেই স্থানে কৌরবপক্ষীয় সৈন্যসমূহ সম্পূর্ণ পরাজিত হইলে অর্জ্জুন কর্ণ-বধে কৃতনিশ্চয় হইয়া তাঁহার প্রতি ধাবিত হইলেন। পথিমধ্যে অশ্বত্থামা ও দুর্য্যোধন তাঁহাকে নিবারণ করিবার চেষ্টা করিলেন, কিন্তু অর্জ্জুন তৎক্ষণাৎ তাঁহাদের কার্ম্মুক, অশ্ব ও সারথি বিনষ্ট করায় ক্ষণকালও বাধা প্রাপ্ত হইলেন না।