পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
কুরু পাণ্ডব

সাম্রাজ্য হস্তগত করিলে পর অনায়াসে আশঙ্কাশূন্য হইয়া তাঁহাদিগকে ফিরাইয়া আনিতে পারেন।

 ধৃতরাষ্ট্র এই সকল যুক্তি সর্ব্বদাই অন্তঃকরণে আলােচনা করিতে লাগিলেন। দুর্যোধনও কার্য্যসিদ্ধি উপলক্ষ্যে প্রজাবৰ্গকে ধন মান দ্বারা বশীভূত করিতে যত্নবান্ হইলেন। অবস্থা যখন অনুকূল বিবেচিত হইল, তখন একদিন পূর্ব্বপরামর্শ অনুসারে মন্ত্রণাকুশল জনৈক অমাত্য রাজসভায় সকলের উপস্থিতিতে বলিতে লাগিলেন—

 বারণাবৎ নগর অতি বৃহৎ ও পরম রমণীয় স্থান। তথায় ভগবান্ ভবানীপতি প্রতিষ্ঠিত আছেন, এই সময়ে তাঁহার পূজনার্থে নানা দিশে হইতে জনসমাগম হইবে।

 এই প্রশংসাবাক্য শুনিয়া বারণাবৎ নগর দর্শন করিবার ইচ্ছা পাণ্ডবদের মনে উদয় হইল। ধৃতরাষ্ট্র তাঁহাদের কৌতূহলের উদ্রেক বুঝিতে পারিয়া দুর্যোধনের প্রীতিসাধনমানসে প্রবৃত্ত হইয়াও অধর্ম্মভয়ে সঙ্কুচিত হইয়া কুণ্ঠিতান্তঃকরণে তাঁহাদিগকে উৎসাহ করিয়া বলিলেন–বৎসগণ, সকলেই আমার নিকট বারণাবতের প্রশংসা করে, অতএব ইচ্ছা হয় ত কিছুদিন তথায় কালযাপন করিয়া আসিতে পার।

 ধীমান্ যুধিষ্ঠির ধৃতরাষ্ট্রের ভাবে কোনো একটা দুরভিসন্ধির সন্দেই করিলেন, কিন্তু নিজেকে নিরুপায় বােধে “তথাস্তু” বলিয়া তাহা স্বীকার করলেন।

 এই ঘটনায় দুর্য্যোধনের আনন্দের সীমা রহিল না।