পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৪১

 দুর্য্যোধন এইরূপে অভিহিত হইলে ক্ষণকাল চিন্তানিমগ্ন খাকিয়া অবশেষে কহিলেন―

 সখে! তুমি যাহা কহিলে তাহা সত্য, কিন্তু ভীমসেন শার্দ্দুলের ন্যায় দুঃশাসনকে হনন করিয়া যে সকল বাক্য প্রয়ােগ করিয়াছেন, তাহা তােমার অবিদিত নাই, তাহার পর আর কিরূপে শান্তি সম্ভবে? কর্ণকেও এই বহুদিন বাঞ্ছিত দ্বৈরথ যুদ্ধ হইতে নিবৃত্ত করা কর্ত্তব্য নহে। হে গুরুপুত্র! আমি ভীত হইবার কোন কারণ দেখিতেছি না। প্রচণ্ড বায়ু যেমন মেরু পর্ব্বতকে ভগ্ন করিতে পারে না, তদ্রূপ অর্জ্জুনও কখনই মহাবীর কর্ণকে পরাজয় করিতে সক্ষম হইবে না।

 এদিকে, সেই পরস্পর-প্রহার-প্রবৃত্ত প্রতিদ্বন্দ্বিদ্বয় অনবরত জ্যা-নিস্বন ও তলধ্বনি করিয়া বিবিধ অস্ত্রসকল পরিত্যাগ করিতেছিলেন। এই সময়ে মহাবীর ধনঞ্জয়ের শরাসন-জ্যা অতিমাত্র আকৃষ্ট হওয়ায় ঘােররবে সহসা ছিন্ন হইয়া গেল। সেই অবসরে লঘুহস্ত সূতপুত্র বহুসংখ্যক ক্ষুদ্রক ও কঙ্কপত্র-ভূষিত অন্যান্য বাণে ধনঞ্জয়কে সমাচ্ছন্ন করিলেন। অর্জ্জুনের রক্ষকগণ সমীপে আগত হইয়া বহুবিধ চেষ্টা করলেও কিছুতেই কর্ণশর খণ্ডন করিতে না পারায় কৃষ্ণ ও অর্জ্জুন গাঢ় বিদ্ধ হইয়া রুধিরাক্ত হইলেন। কৌরবগণ তদ্দর্শনে আপনাদিগকে সমরবিজয়ী জ্ঞান করিয়া আনন্দধ্বনি ও সিংহনাদ করিতে লাগিলেন।

 তখন মহাবীর ধনঞ্জয় ক্রোধভরে শরাসন-জ্যা অবনামিত