পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৫১

 হে সুত! ধনুর্দ্ধর ধনঞ্জয় আমাদের সৈন্যদিগকে অতিক্রম করিবার চেষ্টা করিতেছেন; অতএব তুমি এক্ষণে সৈন্যগণের পশ্চাদ্ভাগে রথ চলনা কর। আমি সমরে অবস্থান করিয়া যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলে সৈন্যগণ নিশ্চয়ই প্রতিনিবৃত্ত হইবে।

 সারথি দুর্য্যোধনের এই বীরজনোচিত বাক্য প্রতিপালন করিলে অবশিষ্ট পদাতিগণ রাজাকে অসহায় পরিত্যাগ করিয়া যাইতে অনিচ্ছুক হইয়া প্রাণপণে যুদ্ধার্থে পুনরায় দণ্ডায়মান হইল এবং যোধগণও জীরিতাশা পরিত্যাগপূর্ব্বক সংগ্রামে মনোনিবেশ করিয়া ধনঞ্জয়ের উপর বাণবর্ষণ করিতে আরম্ভ করলেন। কিন্তু মহাবীর ধনঞ্জয় গাণ্ডীবপ্রভাবে তাহাদের অস্ত্রসকল অনায়াসে বিফল করিলেন।

 তাঁহার অশনিসদৃশ শরসমূহ জলধরনির্ম্মুক্ত বারিধারারায় নিপতিত হইলে কৌরবসৈন্যগণ তাহা কোনক্রমেই সহ্য করিতে পারিল না। কেহ বাহনবিহীন, কেহ অস্ত্রশূন্য, কেহ বা অস্ত্রাঘাতে বিমোহিত এবং কেহ কেহ পুনরায় পলায়নপরায়ণ হইল। অনেক বীর শিবিরে পুনরাগমনপূর্ব্বক রথ ও অস্ত্র সংগ্রহ করিয়া রণক্ষেত্রে গমন করিতে লাগিলেন।

 এই সময়ে ধৃতরাষ্ট্রের দ্বাদশ পুত্রমাত্র হতাবশিষ্ট ছিলেন, তাঁহারা দলবদ্ধ হইয়া ভীমসেনকে আক্রমণ করিলেন। মহাবীর বৃকোদর কোপাবিষ্ট হইয়া ক্ষুরপ্রদ্বারা কাহারও শিরশ্ছেদন, ভল্লদ্বারা কাহাকে বা নিপাতিত এবং নারাচদ্বারা কাহারও প্রাণসংহার করিয়া ক্রমে নানাবিধ অস্ত্রদ্বারা একে