পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৫৩

যদি দুর্য্যোধন পলায়ন না করেন, তবে তিনিও আমার হস্তে প্রাণত্যাগ করিবেন।

 এই কথায় বাসুদেব দুর্য্যোধন-সৈন্যাভিমুখে অশ্ব সঞ্চালন করিলেন। তখন অশ্ব-সৈন্য লইয়া শকুনি তাঁহাদের গতিরোধ করিলেন। এই সময়ে অমিতপরাক্রম সহদেব স্বীয় প্রতিজ্ঞা স্মরণপূর্ব্বক শকুনির প্রতি ধাবমান হইয়া তাঁহাকে শরাঘাতে অতিশয় সন্তপ্ত করিলেন। এবং এক ভল্লে সম্মুখাগত উলূকের শিরশ্ছেদন করিয়া কহিতে লাগিলেন—

 হে সুবলনন্দন! ক্ষত্রিয়ধর্ম্মানুসারে স্থির হইয়া যুদ্ধ কর। দ্যূতসভামধ্যে যে আহ্লাদ প্রকাশ করিয়াছিলে এক্ষণে তাহার ফল ভোগ কর।

 মহাবীর সহদেব এই কথা বলিয়া ক্রোধভরে শকুনিকে প্রহার করিতে আরম্ভ করিলেন। শকুনি পুত্রের নিধনদর্শনে বাষ্পাকুলনয়নে ক্ষণকাল বিদুরের তৎকালীন হিতবাক্যসমুদায় স্মরণ করিলেন, পরে সহদেবের সম্মুখীন হইয়া নিক্ষিপ্ত অস্ত্রসকল নিবারণের চেষ্টা করিতে লাগিলেন।

 কিন্তু তিনি ক্রুদ্ধ মাদ্রী-তনয়ের বেগ কিছুতেই সহ্য করিতে সক্ষম হইলেন না। অবশেষে শরযুদ্ধ নিস্ফল জ্ঞান করিয়া খড়্গ গদা প্রভৃতি অস্ত্র প্রয়োগ করিতে লাগিলেন, কিন্তু তাহাও সহদেব মধ্যপথেই খণ্ড খণ্ড করিয়া ফেলিলেন। পরিশেষে শকুনি এক সুবর্ণমণ্ডিত প্রাস ধারণপূর্ব্বক তাহা নিক্ষেপ করিতে উদ্যত হইলেন। তখন রোষানলে দগ্ধ মাদ্রীতনয় সেই সমুদ্যত প্রাস সমেত সৌবলের ভুজদ্বয়