পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
কুরু পাণ্ডব

 অনন্তর শুভদিবসে পাণ্ডবদের যাত্রার জন্য বায়ুবেগগামী সদশ্বযুক্ত রথ প্রস্তুত হইল। তাঁহারা মাতৃগণকে প্রদক্ষিণপূর্ব্বক তাঁহাদের নিকট বিদায় লইলেন এবং প্রজাগণকে বিনয়নম্র-বচনে সাদরসম্ভাষণ করিয়া রথারোহণপূর্ব্বক যাত্রা আরম্ভ করিলেন।

 অনন্তর অষ্টম দিবসে মাতৃসহ পাণ্ডবগণ বারণাবতে উপস্থিত হইলেন।

 পুরোচন তাঁহাদের সেবার্থে অত্যুৎকৃষ্ট ভক্ষ্য, পেয়, আসন ও শয্যা-প্রভৃতি সকল প্রকার রাজভােগ্য দ্রব্য রাখিয়াছিল। সেই দুরাত্মাকর্তৃক সৎকৃত ও প্রজাগণদ্বারা পূজিত হইয়া পাণ্ডবগণ দশদিন ঐ স্থানে অবস্থান করিলেন।

 একাদশ দিবসে পুরোচন স্বীয় গর্হিত অভিসন্ধিসিদ্ধির নিমিত্ত তাঁহাদিগকে সাদরনিমন্ত্রণে জতুগৃহে বাসার্থে লইয়া গেল।

 গৃহে প্রবেশ করিয়াই যুধিষ্ঠির ভীমকে বলিলেন–

 ভ্রাতঃ! আমি নিঃসন্দেহ এই গৃহে ঘৃত ও জতুমিশ্রিত বসাগন্ধ পাইতেছি। এই দেখ কোনাে নিপুণ শিল্পী ঘৃৃতাক্ত মঞ্জু বল্লজ ও বংশপ্রভৃতি আগ্নেয় দ্রব্যসমূহে এই গৃহ নির্ম্মাণ করিয়াছে। অহো। দুর্যোধনের কি ক্রূর অভিপ্রায়! আমি এক্ষণে প্রত্যক্ষবৎ উহার সমস্ত কৌশল অবগত হইতেছি। সে পুরােচনের দ্বারা আমাদিগকে এই গৃহের সহিত দগ্ধ করিবার সঙ্কল্প করিয়াছে!

 ভীম স্তম্ভিতের ন্যায় এই সকল যুক্তি শুনিয়া কহিলেন–