পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৬৯

যতই যুক্তি প্রদর্শন কর না কেন ভীমসেন যে অধর্ম্মাচরণ করিয়াছেন, সে ধারণা আমার মন হইতে দূরীকৃত হইবে না। লােকমধ্যেও তাহার কূটযোদ্ধা বলিয়া চির অখ্যাতি রহিয়া যাইবে।

 বলরাম এই কথা বলিয়া মহারােষে রথারােহণপূর্ব্বক দ্বারকাভিমুখে প্রস্থান করিলেন।

 তখন রাজা দুর্য্যোধন কহিলেন—

 হে কৃষ্ণ! সসাগরা বসুন্ধরার শাসন, বিপক্ষগণের মস্তকোপরি অবস্থান এবং অন্যান্য ভূপালগণের দুর্লভ সুখসম্ভোগ ও ঐশ্বর্য্যলাভ করিয়াছি; পরিশেষে ধর্ম্মপরায়ণ ক্ষত্রিয়-বাঞ্ছিত পরমগতি প্রাপ্ত হইলাম। এক্ষণে ভ্রাতৃবর্গ ও বন্ধু বান্ধবের সহিত আমি স্বর্গে চলিলাম, তােমরা এই শোকসমাকুল শূন্যরাজ্য গ্রহণ কর।

 অনন্তর দুর্য্যোধন দেহ ত্যাগ করিলেন।

 তাঁহার উক্ত বাক্যে পাণ্ডবগণকে বিষণ্ণ দেখিয়া কৃষ্ণ কহিতে লাগিলেন—

 ভ্রাতৃগণ! এক্ষণে আমাদের অভিপ্রায় সিদ্ধ হইয়াছে, সায়ংকালও উপস্থিত; অতএব চল, উপযুক্ত স্থানে গমনপূর্ব্বক যুদ্ধাবসানে মাঙ্গলিক কার্য্যের অনুষ্ঠান করা যাক।

 এইরূপ কথােপকথন করিতে করিতে বাসুদেবসহ পাণ্ডবগণ সত্যকিকে সঙ্গে লইয়া পবিত্রসলিলা নদীতীরে গমন করিলেন এবং তথায় কৃষ্ণের উপদেশানুসারে মাঙ্গলিক-ক্রিয়া সম্পাদনার্থে রাত্রিযাপন করা স্থির করিলেন।