পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কুরু পাণ্ডব
১৯

 হে আর্য্য। যদি এই গৃহ স্পষ্টই আগ্নেয় বলিয়া বোধ হয়, তবে আর এখানে কালবিলম্ব করিবার কি প্রয়োজন? চল, আমরা যেখানে ছিলাম সেখানেই ফিরিয়া যাই।

 যুধিষ্ঠির কহিলেন—হে বৃকোদর! বিবেচনা করিয়া দেখিলে আমাদের এখানেই বাস করা কর্ত্তব্য। নরাধম পুরোচন যদি বুঝিতে পারে যে, আমাদের মনে সন্দেহ জন্মিয়াছে, তাহা হইলে সে আমাদিগকে তদ্দণ্ডে দগ্ধ করিবে, কারণ সে দুর্ম্মতির অধর্ম্ম বা লোকনিন্দা কিছুরই ভয় নাই। এই জতুগৃহের মধ্যে বিবর খনন করিয়া রাত্রিকালে গোপনভাবে সেখানে বাস করিলে অগ্নি হইতে আর আমাদের কোনো ভয় থাকিবে না।

 এই সময়ে বিদুর প্রেরিত এক বিশ্বাসী ব্যক্তি পাণ্ডবদের নিকট আসিয়া নিবেদন করিল—

 হে মহাত্মগণ! আমি খমক, আপনাদের পরমহিতৈষী পিতৃব্য আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন। দুর্যোধনের আদেশে কোনো কৃষ্ণপক্ষীয় চতুর্দ্দশীর রাত্রে পুরোচন এই গৃহে অগ্নি প্রয়োগ করিবে, এ কথা তিনি অবগত হইয়াছেন।

 যুধিষ্ঠির কহিলেন—হে খনক! তোমাকে যখন আমাদের পরম-হিতাকাঙক্ষী পিতৃব্য পাঠাইয়াছেন, তখন তোমাকেও আমাদের সুহৃদ্ বলিয়া জানিলাম।

 খনক সেই গৃহমধ্যে এক মহাগর্ত্ত প্রস্তুত করিয়া তাহা হইতে বহির্গমনের এক সুরঙ্গ পথ নির্ম্মাণ করিল। যাহাতে গৃহে কেহ আসিলেও ইহা বুঝিতে না পারে, এই নিমিত্ত