পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
কুরু পাণ্ডব

 গর্ত্তের মুখ এক কবাটদ্বারা বন্ধ করা হইল। পুৱোচনকে বঞ্চনা করিবার জন্য দিবাভাগে পাণ্ডবগণ বিশ্বস্তের ন্যায় ইতস্তত মৃগয়া করিয়া বেড়াইতেন। রাত্রিকালে খনক-নির্ম্মিত গহ্বরে অতি সতর্কতার সহিত শয়ন করিতেন।

 এইরূপে সম্বৎসরকাল কাটিয়া গেলে পুরোচন পাণ্ডবদিগকে একান্ত বিশ্বস্ত জ্ঞান করিয়া কার্য্য সুসিদ্ধ হইবার আশায় উৎফুল্ল হইয়া উঠিল। তাহাকে হৃষ্টচিত্ত দেখিয়া যুধিষ্ঠির ভ্রাতাদিগকে বলিলেন—

 দুরাত্মা পুরোচন আমাদিগকে বিশ্বস্তবোধে পরিতুষ্ট হইয়াছে। এই আমাদের পলায়নের উপযুক্ত সময়। পুরোচনের দ্বারা অগ্নিসংযোগের অপেক্ষা না করিয়া আইস, আমরাই জতুগৃহ দাহপূর্ব্বক সুরঙ্গপথ অবলম্বনে অলক্ষিতভাবে পলায়ন করি।

 অনন্তর ঘোর তিমিরাবৃত রাত্রিকাল উপস্থিত হইল। পাণ্ডবগণ সকলকে নিদ্রিত ও অসন্দিগ্ধ জানিয়া পলায়নের উদ্যোগ করিলেন। ভীম নিঃশব্দ পদবিক্ষেপে পূর্ব্বপরামর্শ অনুসারে অগ্রে পুরোচন-অধিকৃত আয়ুধাগারে, পরে জতুগৃহের দ্বারে এবং চতুর্দ্দিকের প্রাচীরে দ্রুত অগ্নিপ্রদান করিলে সকলে মিলিয়া বহুকষ্টে সুরঙ্গপথ অবলম্বনে নির্জন বনমধ্যে নিষ্ক্রান্ত হইলেন।

 অগ্নির উত্তাপ ও শব্দ প্রবল হইয়া উঠিলে জাগ্রত পুরবাসিসকল চতুর্দ্দিক হইতে ধাবমান হইল। পাণ্ডবদিগের জ্বলন্ত আবাসস্থানকে সুস্পষ্টরূপে আগ্নেয়দ্রব্য-নির্ম্মিত বুঝিতে