পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কুরু পাণ্ডব
৩৩

মিলিয়া ভােগ করিবার কথা বলিয়া ফেলিয়াছি। এক্ষণে আমার কথা মিথ্যা না হয় অথচ অধর্ম্মও না হয়, এমন কিছু বিধান কর।

 মতিমান্ যুধিষ্ঠির কিয়ৎকাল চিন্তা করিয়া স্বার্থত্যাগপূর্ব্বক কহিলেন—

 হে অর্জ্জুন! দ্রৌপদী তােমারই জয়লব্ধ ধন, অতএব তুমিই যথারীতি ইহার পাণিগ্রহণ কর।

 অর্জ্জুনও জ্যেষ্ঠের ন্যায় একমাত্র ধর্ম্মের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া কহিলেন—

 হে আর্য্য! আমাকে অধর্ম্মে লিপ্ত করিও না। জ্যেষ্ঠেরই অগ্রে বিবাহ করা উচিত। অতএব আমাদের এবং পাঞ্চালেশ্বরের হিতের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া কর্ত্তব্য স্থির কর। আমাদিগকে তােমার একান্ত বশংবদ জানিবে।

 যুধিষ্ঠির ভ্রাতৃগণকে বিষণ্ণবদনে উপবিষ্ট দেখিয়া তাঁহাদের মানসিক অবস্থা বুঝিয়া লইলেন। এই উপলক্ষে পাছে ভ্রাতৃ বিচ্ছেদের সূচনা হয়, এই ভয়ে বিশেষ চিন্তান্বিত হইয়া যুধিষ্ঠির তাঁহাদিগকে নির্জ্জনে লইয়া গিয়া কহিলেন―

 আমি বিবেচনা করি এই― দ্রৌপদী আমাদের সকলেরই হউক। বর্ত্তমান সমস্যার এই একমাত্র উপায় দেখিতেছি, ইহাতে মাতারও বাক্য রক্ষা হইবে, আমাদের মধ্যেও কাহার কোন ঈর্ষ্যার কারণ থাকিবে না।

 এই সময়ে যাদবশ্রেষ্ঠ কৃষ্ণ ও বলদেব, পাণ্ডবগণ স্বয়ম্বরসভা হইতে কোথায় গমন করিয়াছেন, অনুসন্ধান করিতে