পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
কুরু পাণ্ডব

তাহাতে পতিত হইলেন। তখন ভীমার্জ্জুন বা নকুল সহদেব কেহই হাস্য সম্বরণ করিতে পারেন নাই। সময় যুধিষ্ঠিরের আজ্ঞায় কিঙ্করগণ সত্বর উত্তমােত্তম বস্ত্র আনিয়া, তাঁহাকে প্রদান করিল।

 ইহার পর দুর্য্যোধন আর বুদ্ধিস্থির রাখিতে না পারিয়া সর্ব্বত্রই জলভাগে স্থলের এবং স্থলভাগে জলের আশঙ্কা করিতে লাগিলেন এবং স্থানে স্থানে স্ফটিক ভিত্তিজ্ঞানে হস্তদ্বারা বিঘট্টিত করিতে গিয়া পতনোন্মুখ হইলেন।

 এই সকল দুরবস্থা দেখিয়া পাণ্ডবগণ অনেকপ্রকার উপহাস করিতে আরম্ভ করিলেন। কোপনস্বভাব দুর্য্যোধন তাহা যেন শুনিয়াও শুনিলেন না, কিন্তু প্রকৃওপক্ষে তাহা মর্ম্মস্থলে বিদ্ধ হইয়া তাঁহার মনােমধ্যে অনেক প্রকার দুর্ম্মতির উদ্রেক করিতে লাগিল। অনন্তর বিবিধ অদ্ভুত ব্যাপার সন্দর্শনপূর্ব্বক যুধিষ্ঠিরের অনুজ্ঞা গ্রহণ করিয়া দুর্য্যোধন হস্তিনাপুরে প্রস্থান করিলেন।

 পথে তিনি মহাত্মা পাণ্ডবগণের মহান্ মহিমা, পার্থিবগণের একান্ত বশবর্ত্তিতা, যুধিষ্ঠিরের অতুল ঐশ্বর্য্য এবং সভার অদৃষ্টপূর্ব্ব শোভা চিন্তা করিতে করিতে অতিশয় বিমর্ষচিত্তে গমন করিতে লাগিলেন। শকুনি তাঁহাকে তদবস্থ দেখিয়া কহিলেন—

 হে দুর্য্যোধন! তুমি কি নিমিত্ত এরূপ বিষণ্ণ মনে গমন করিতেছ?

 দুর্য্যোধন কহিলেন―মাতুল! এই সসাগরা বসুন্ধরাকে