পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪]
কুরু পাণ্ডব
৫৩

সমস্ত সম্পত্তিই নষ্ট করিলে। এক্ষণে আর কিছু থাকে ত বল, না হয় ক্রীড়ায় ক্ষান্ত হওয়াই শ্রেয়।

 যুধিষ্ঠির রুষ্ট হইয়া বলিলেন—

 হে সুবলনন্দন! তুমি কি নিমিত্ত আমার ধনসম্বন্ধে সন্দেহ করছে? আমার এখনও যথেষ্ট অবশিষ্ট রহিয়াছে।

 এই বলিয়া তিনি আর যেখানে যত রজতকাঞ্চন মণিমানিক্য ছিল তৎসমস্ত ভ্রাতৃগণ ও অনুচরবর্গের পরিহিত অলঙ্কারসমেত পণ রখিয়া পুনরায় ক্রীড়া করিলেন এবং পূর্ব্ববৎই তাহা হারাইলেন।

 অবশেষে হতবুদ্ধি ন্যায় বিবেচনাশূন্য হইয়া বলিলেন―হে সুবলাত্মজ! আমার কনিষ্ঠ ভ্রাতৃদ্বয় আমার নিতান্ত প্রিয় এবং পণের অযোগ্য হইলেও আমি ইহাদিগকে পণ রাখিয়া তােমার সহিত ক্রীড়া করিব। শকুনি অক্ষক্ষেপমাত্রই জয়লাভ করিয়া বলিলেন―

 তোমার প্রিয় মাদ্রীপুত্রদ্বয়কে জয় করিলাম। এক্ষণে বােধ করি তোমার প্রিয়তর ভীমার্জ্জুনকে লইয়া ইহাদের ন্যায় পণ্যদ্রব্যবৎ ক্রীড়া করতে সাহসী হইবে না, অতএব বিফল ক্রীড়ায় প্রয়ােজন কি?

 যুধিষ্ঠির ক্রুদ্ধ হইয়া কহিলেন―

 রে মূঢ়! তুমি কি মনে করিতেছ এরূপ অযথাবাক্যের দ্বারা আমাদের মধ্যে ভেদ উৎপাদন করবে। এই দেখ ভীমার্জ্জুন পণের নিতান্ত অযােগ্য হইলেও আমি তাঁহাদিগকে পণ রাখিয়া ক্রীড়া করিতেছি।