পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪]
কুরু পাণ্ডব
৫৭

 প্রাতিকামী প্রত্যাগত হইয়া পূর্ব্ববৎ সভাস্থ সুকলকে দ্রৌপদীর বাক্য নিবেদন করিল। সভ্যগণ দুর্য্যোধনের আগ্রহ দেখিয়া তাঁহার অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে কিছু বলিতে সাহস করিলেন না, অথচ দ্রৌপদীকে কোন অধর্ম্মযুক্ত কথা বলিতেও তাঁহাদের প্রবৃত্তি হইল না, সুতরাং তাঁহারা অধোবদনে নিরুত্তর রহিলেন।

 যুধিষ্ঠির দ্রৌপদীকে সভায় আনয়নসম্বন্ধে দুর্য্যোধনকে কৃতসংকল্প দেখিয়া গােপনে দূতদ্বারা তাঁহাকে শশুরের সমক্ষে আসিয়া রোদন করিতে উপদেশ প্রেরণ করিলেন।

 প্রাতিকামী সমূহ বিপদ অনুভব করিয়া দুর্য্যোধনের ভয় পরিত্যাগপূর্ব্বক পুনরায় সভাসগণকে উত্তেজিত করিবার নিমিত্ত কহিতে লাগিল—

 আমি দ্রৌপদীকে আপনাদের কী উত্তর প্রদান করিব? তখন দুর্য্যোধন প্রাতিকামীর প্রতি রোষ প্রকাশপূর্ব্বক কহিল―

 হে দুঃশাসন! সূতপুত্র নিতান্ত অল্পচেতা, এ দেখিতেছি বৃকোদরকে ভয় করে, তুমি স্বয়ং গিয়া কৃষ্ণাকে আনয়ন কর। অবশ শত্রুগণ তোমার কি করতে পারিবে?

 দুরাত্মা দুঃশাসন আজ্ঞা পাইবামাত্র ত্বরায় দ্রৌপদীর গৃহে প্রবেশ করিয়া বলিল—

 হে পাঞ্চালি! তুমি দ্যূতে পরাজিত হইয়াছ, অতএব লজ্জা পরিত্যাগপূর্ব্বক সভায় আগমন কর।

 দ্রৌপদী দুঃশাসনের আরক্ত নেত্র অবলােকনে সাতিশয়